পদক্ষেপ: পথেঘাটেও হচ্ছে পরীক্ষা। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
এক সময়ে দ্বীপাঞ্চল গোসাবা ছিল করোনা থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত। কিন্তু ইদানীং বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বুধবার পর্যন্ত এই ব্লকে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৯৪ জন। তবে দ্বীপাঞ্চল হওয়ায় বহু মানুষ জ্বরে ভুগলেও হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসছেন না। ফলে কোভিড পরীক্ষাও হচ্ছে না।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার থেকে গোসাবা ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা শুরু করেছেন। র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ও প্রয়োজনে আরটিপিসিআর টেস্টের ব্যবস্থাও করছেন। বিভিন্ন বাজার এলাকায় জ্বর মাপার পাশাপাশি কোভিড পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে গোসাবা বাজার টানা পাঁচদিন বন্ধ রেখেছিল প্রশাসন। কিন্তু তবুও সংক্রমণে রাশ টানা যায়নি। এ দিকে, বাজার লাগাতার বন্ধ রাখলে এলাকার মানুষের রুজিরুটিতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি করে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো রোগে কেউ ভুগছেন কি না, সেই খোঁজও নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকেই গোসাবার খেয়াঘাট, বাজার এলাকায় প্রচুর মানুষের কোভিড পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। প্রথম দিনেই প্রায় ছ’শোর বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলেও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। গোসাবার দ্বীপাঞ্চলে প্রবেশের খেয়াঘাটগুলিতে বাড়তি নজরদারি ফের শুরু হয়েছে। মাস্ক পরার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে এ নিয়ে মাইকে প্রচার চলছে। নির্দেশিকা অমান্য করে রাস্তায় মাস্ক ছাড়া বেরোলে পুলিশের তরফে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সবের পাশাপাশি গোসাবা ব্লকে এখনও কাদের ভ্যাকসিন বাকি, সে বিষয়েও খোঁজখবর শুরু করেছে প্রশাসন। বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “যাতে গোসাবা ব্লকে সংক্রমণকে প্রতিহত করা যায়, সে কারণেই এই উদ্যোগ। বিধানসভা উপনির্বাচনের আগেই এখানে একশো শতাংশ ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে দু’হাজারের মতো মানুষের দ্বিতীয় ডোজ় বাকি রয়েছে। সেগুলিও যাতে যথা সময়ে দেওয়া যায়, দেখা হচ্ছে।” ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ইন্দ্রনীল বর্গী বলেন, ‘‘যে ভাবে গত কয়েকদিনে সংক্রমণ বেড়েছে, তাতে এই দ্বীপাঞ্চলের মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে ফিভার স্ক্রিনিং ও করোনা পরীক্ষার উদ্যোগ করা হয়েছে। সব জ্বরে আক্রান্তেরাই যে কোভিডে আক্রান্ত নন, সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। আবার যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের গৃহ নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”