ফরিদা পারভিন
কন্যাসন্তান হওয়ায় এক বধূকে মারধর করে মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠল শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের মির্জানগর গ্রামে। ফরিদা পারভিন নামে ওই বধূকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী করিমুল্লা, শ্বশুর আরসাদ আলি মণ্ডল ও শাশুড়ি আয়েশা বিবির খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, করিমুল্লা কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল। বছর পাঁচেক আগে হাসনাবাদের রামেশ্বরপুর গ্রামের ফরিদার সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। ওই দম্পতির বছর তিনেকের এক কন্যাসন্তান আছে।
অভিযোগ, মেয়ে সন্তান হওয়ায় ফরিদাকে দায়ী করে তাঁর উপরে অত্যাচার চলত শ্বশুরবাড়িতে। প্রতিবাদ করলে মারধর করা হতো। খেতে দেওয়া হতো না। এ সব নিয়ে একাধিকবার গ্রামে সালিশি সভা হয়। তাতেও কোনও লাভ হয়নি। থানা, পুলিশ, আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছিল বিষয়টি।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন সকাল থেকে পুরনো বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। করিমুল্লা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। ফরিদাও শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে চান। কিন্তু শ্বশুর-শাশুড়ি পথ আটকায়। বিকেলে করিমুল্লা বাড়ি ফিরলে ফের শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর গণ্ডগোল।
ফরিদা পুলিশকে জানান, মারধরের পরে স্বামী ওড়নার ফাঁসে তাঁকে খুনের চেষ্টা করে। শ্বশুর অ্যাসিডের বোতল নিয়ে তাঁর মুখে ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে। ফরিদার কথায়, ‘‘মুখে অ্যাসিড ঢালার চেষ্টা করলে চিৎকার করি। তখন প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে যান। সে কারণে আর ঢালতে পারেনি।’’
শনিবার রাতেই ভাই আজিজুল ইসলামকে নিয়ে থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন ফরিদা। আজিজুল বলেন, ‘‘জামাইবাবুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক জানার পর থেকেই দিদির উপরে অত্যাচার শুরু হয়। তার উপরে কন্যাসন্তান হওয়ায় অত্যাচার আরও বেড়ে গিয়েছিল।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে করিমুল্লা বলে, ‘‘কন্যাসন্তানের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। স্ত্রী আমাকে সন্দেহ করেন। চান বাবা-মাকে ছেড়ে আমি তাঁকে নিয়ে কলকাতায় থাকি। এ নিয়ে স্ত্রী আমাকেই মারধর করতেন। ঘটনার দিন রেগে গিয়ে একটা চড় মেরেছিলাম।’’ গ্রিলে লেগে স্ত্রীর মুখ কেটে গিয়েছে বলে দাবি করিমুল্লার।