পেট্রাপোল আসবেন অমিত শাহ। — ফাইল চিত্র।
আজ, মঙ্গলবার দু’ঘণ্টার সফরে উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল বন্দরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সুসংহত চেকপোস্টে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এখানকার দ্বিতীয় কার্গো গেটের শিলান্যাস এবং পেট্রাপোল থানার নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন বলে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এ জন্য আজও বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত-বাণিজ্য বন্ধ থাকছে। অনুষ্ঠানের সময়ে দু’দশের মধ্যে হেঁটে পারাপার নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে পেট্রাপোল বন্দর এলাকার নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের আগে বন্দরের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ। তিনি বলেন, ‘‘পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে দু'দেশের মধ্যে যাতায়াত করা মানুষদের বসার কোনও জায়গা নেই। যশোর রোডে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরণার্থীদের মতো তাঁদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ঝড়-বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাছে আমাদের দাবি, যাত্রীদের জন্য পরিকাঠামো তৈরি করুক। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি পাঠাচ্ছি।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হেলিকপ্টারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দুপুর ১২টা নাগাদ পেট্রাপোল বন্দরের কাছে কালিয়ানি বিএসএফ ক্যাম্পের হেলিপ্যাডে নামার কথা। সেখান থেকে গাড়িতে তিনি বন্দরে আসবেন। সোমবার পুলিশ ও বিএসএফ জওয়ানদের তৎপরতা ছিল তুঙ্গে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে ট্রাক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সোমবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, এলাকা কার্যত সুনসান। যশোর রোডের দু'পাশের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ। ঘনঘন বিএসএফ এবং পুলিশের গাড়ির আনাগোনা চলছে। বনগাঁর পুলিশ সুপার জয়িতা বসু বন্দর এলাকায় গিয়ে পুলিশি নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। পুলিশ কর্মীরা মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সীমান্ত হওয়ার কারণে এমনিতেই এখানে সব সময় নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের জন্য তা বেড়েছে। দেখা গেল, বাইরে থেকে গাড়ি ভর্তি জওয়ানরা আসছেন। বিএসএফের হরিদাসপুর ক্যাম্পটি সাজানো হয়েছে। সুসংহত চেক পোস্টে ঢোকার মুখে জওয়ানরা দাঁড়িয়ে। নতুন যে থানা ভবনটি উদ্বোধন হওয়ার কথা, তার সমানে মাটি ফেলে রোলার দিয়ে সমান করা হচ্ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এখনও বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তের ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এর কাছে একটি ভবনে থানা চলছে। ফলে, অভাব অভিযোগ নিয়ে রাতের দিকে সাধারণ মানুষকে থানায় যেতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। নতুন ভবনটি তৈরি হয়েছে বন্দর এলাকায় যশোর রোডের পাশে। সেখানে রাতের দিকে যেতে আর সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন অনেকে। থানার ঝকঝকে নতুন ভবনটি দেখতে এ দিন অনেকে আসেন। সামনে দাঁড়িয়ে নিজস্বীও তোলেন। তাঁদেরই একজনের কথায়, ‘‘থানা ভবন দেখে মনে হচ্ছে কোনও অভিজাত হোটেল। থানায় লিফট আছে। আমরা চাই এখান থেকে অবিলম্বে থানার কাজকর্ম শুরু হোক।’’
বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিতীয় কার্গো গেটের শিলান্যাস করবেন। গেটটি তৈরি হলে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে গতি আসবে। ট্রাক চালক ও খালাসিরা উপকৃত হবেন।’’