উদ্বেগে কম আসছেন বাংলাদেশিরা
Pahalgam

জঙ্গি হানার জের, রফতানিতে ধাক্কা পেট্রাপোল বন্দরে

গত বছর অগস্টে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্যে প্রভাব পড়েছিল। পরে অবশ্য তা স্বাভাবিক গতিতেই হচ্ছিল।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১০:১১
Share:
যাত্রিসংখ্যা কমেছে পেট্রাপোলে। সারা দিনে যাতায়াত করছেন হাতেগোনা কয়েক জন মাত্র।

যাত্রিসংখ্যা কমেছে পেট্রাপোলে। সারা দিনে যাতায়াত করছেন হাতেগোনা কয়েক জন মাত্র। নিজস্ব চিত্র 

পহেলগামে জঙ্গি হামলার জেরে ভারত ‘প্রত্যাঘাতে’র হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানকে। দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। তার জেরে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর পেট্রাপোল দিয়ে ভারত থেকে পণ্য রফতানি এবং বাংলাদেশিদের আসা কমছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। কারণ হিসেবে সীমান্ত-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত লোকজন মনে করছেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে বাংলাদেশে রফতানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বহু ব্যবসায়ী। তা ছাড়া, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ কাদের পক্ষ
নেবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে অনেকের।

শুল্ক দফতর অনুমোদিত আমদানি এবং রফতানিকারীদের প্রতিনিধিদের সংগঠন— পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ৫, ৬ এবং ৭ এপ্রিল পেট্রাপোল থেকে বেনাপোলে (বাংলাদেশ) পণ্য রফতানি হয়েছে যথাক্রমে ৩৯৬, ৪৩৬ এবং ৪৩২ ট্রাক। ২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গি হানার পর ২৫, ২৬ এবং ২৭ এপ্রিল পণ্য রফতানি হয়েছে যথাক্রমে ২৯১, ৩৫১ এবং ৩৭৩ ট্রাক।

ওই সংগঠনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী মনে করছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রফতানিকারীরা বাংলাদেশে পণ্য পাঠাতে সংশয়ে ভুগছেন। যদি পরিস্থিতির অবনতি হয়, তা হলে বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। সে ক্ষেত্রে পণ্য পাঠিয়ে টাকা না পাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। সে কারণে অনেক রফতানিকারী পণ্য পাঠাতে চাইছেন না।’’

পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, ‘‘ভারত-পাক সম্পর্কে উত্তেজনার কারণে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি কম হচ্ছে। বাংলাদেশ কাদের পক্ষ নেবে, বোঝা যাচ্ছে না।’’

গত বছর অগস্টে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্যে প্রভাব পড়েছিল। পরে অবশ্য তা স্বাভাবিক গতিতেই হচ্ছিল। কিন্তু ফের ধাক্কা। অবশ্য শুধু বাণিজ্যেই নয়, গত এক সপ্তাহে পেট্রাপোল হয়ে এ দেশে বাংলাদেশিদের আসাও কমেছে বলে দাবি বন্দরের মুদ্রা বিনিময় কারবারে যুক্ত লোকজন।

গত অগস্ট মাসের পর থেকে এমনিতেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে কম লোকজন আসছিলেন। বাংলাদেশিদের জন্য এখন কেবলমাত্র ‘মেডিক্যাল ভিসা’ দেওয়া হয়। গত সাত দিনে বাংলাদেশিদের আসা আরও কমেছে দাবি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রের কর্মী শান্তনু অধিকারীর। তিনি বলেন, ‘‘পহেলগামের ঘটনার আগে রোজ ৩০ জন বাংলাদেশি আমাদের কেন্দ্রে টাকা ভাঙাতেন। এখন সংখ্যাটা কমে হচ্ছে গড়ে ১০ জনের মতো। বাংলাদেশিদের মধ্যেও আতঙ্ক, যদি ভারতের পরিস্থিতি জটিল আকার নেয়, তা হলে তাঁরা এসে বিপদে পড়তে পারেন।’’

সোমবার ফরিদপুর থেকে স্বামীর সঙ্গে পেট্রাপোলে এসেছিলেন এক মহিলা। তাঁর কথায়, ‘‘চোখের চিকিৎসা করাতে এসেছি। আমাদের দেশের পরিস্থিতি অনেক দিনই ভাল নয়। এখানেও তো শুনছি পরিস্থিতি ভাল নয়। দ্রুত চিকিৎসক দেখিয়ে ফিরে যাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন