মদের দোকান ভাঙচুর করছেন মহিলারা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
মদের দোকান হওয়ার পর থেকেই এলাকায় বাড়ছিল দুষ্কৃতীদের উপদ্রব। অভিযোগ, সন্ধ্যার পর মহিলারা রাস্তায় বেরোতে পারছিলেন না। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই মহিলাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছিল ক্ষোভ।
রবিবার বিকেলে এই ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ল এলাকায়। এ দিন বনগাঁ থানার জোকা আমতলা এলাকার প্রায় সাতশো মহিলা একজোট হয়ে ভেঙে ফেললেন ওই মদের দোকানটি। দোকানে থাকা মদের বোতলগুলি ভেঙে মাঠের মধ্যে ফেলা হয়েছে। এরপরেই তাঁরা বনগাঁ-বাগদা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। ঘণ্টা খানেক পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে মহিলারা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
অবরোধকারী লিপিকা সরকার, সীমা সেন, বান্টি বিশ্বাসের অভিযোগ, মদের দোকানের কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বাইরে থেকে মদ্যপ যুবকেরা এসে পরিবেশ দূষিত করছে। মহিলাদের কটূক্তি করা হচ্ছে। পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপরেই এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
মহিলাদের অভিযোগ, একটি পাট খেতের মধ্যে সম্প্রতি ওই মদের দোকানটি করা হয়েছিল। সেখানে দেশি ও বিদেশি মদ পাওয়া যেত। ওই দোকানে বসে মদ খেতেন গ্রামের পুরুষেরাও। এর ফলে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। সংসারে অশান্তি বাড়ছিল। বাইরে থেকেও অনেকে আসতেন মদ্যপান করতে। মাঠে ঘাটে তাঁদের দৌরাত্ম্যে মহিলারা ঘর থেকে বেরোতে পারতেন না। পুলিশের কাছে মদের দোকান বন্ধের আর্জিও জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে কান দেয়নি পুলিশ-প্রশাসন। পুলিশ জানায়, বৈধ অনুমতি নিয়েই মদের দোকানটি খোলা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
অতীতে একটা সময় ছিল যখন চুরি ছিনতাই ডাকাতি খুনের ঘটনা এলাকার মানুষের ঘুম উড়ে গিয়েছিল। তবে বছর দশেক হল এলাকায় শান্তি ফিরেছে। মানুষ গভীর রাতেও নির্ভয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু এই মদের দোকান হওয়ার পর অতীতের ছায়া দেখতে শুরু করেছেন অনেকে। তাতেই ভয় পেয়ে এ দিন মদের দোকান ভাঙচুর চালান মহিলারা।