তছনছ: উপড়ে ফেলা হয়েছে নলকূপ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
মদ্যপ অবস্থায় হেলমেট ছাড়া বেপরোয়া ভাবে মোটরবাইক চালানোর অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। কেন তাকে গ্রেফতার করা হল, এই প্রশ্ন তুলে কয়েকজন রাস্তাতেই পুলিশের উপরে হামলা চালাল।
এক পুলিশ অফিসার ও দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। অধীরবাবুর মাথায় চোট লাগে। তাঁর দুটি দাঁত ভেঙে গিয়েছে। স্থানীয় মানুষ ঠেকানোর চেষ্টা করলে ব্যর্থ হন। হামলাকারীরা সকলেই চাকদহ থানার বালিয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা।
বুধবার রাত ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গোপালনগরের দশমাইল এলাকায় বনগাঁ-চাকদহ রাজ্য সড়কে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় ৪০ জন লোক লাঠিসোটা নিয়ে জড়ো হয়ে পুলিশের উপরে চড়াও হয়। ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের একটি গুমটি ঘর, পানীয় জলের টিউবওয়েল, সিগন্যাল আলো, গার্ডরেল। জখম পুলিশ কর্মীরা বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের মারধরের ঘটনায় সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ জখম পুলিশ অফিসারের নাম অধীর সরকার। সিভিক ভলান্টিয়ারদের নাম প্রসেনজিৎ মাতব্বর এবং শুভঙ্কর কীর্তনীয়া। ধৃতদের বৃহস্পতিবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় গোপালনগর থানার পক্ষ থেকে রোজ রাতেই যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি করা হয়। পুলিশ কর্মীদের থাকার জন্য একটি গুমটি ঘরও তৈরি করা হয়েছে। বুধবার ওই এলাকায় নাকা তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। দায়িত্বে ছিলেন বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায়। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি দেখেন, হেলমেট ছাড়া বেপরোয়া গতিতে মনোজ সরকার নামে এক যুবক নদিয়ার বালিয়া বাজার এলাকা থেকে গোপালনগরের দিকে আসছে। তাকে থামিয়ে ব্রিদ অ্যানালাইজার দিয়ে পরীক্ষা করা হয়।
দেখা যায়, সে মদ্যপ। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। অনিলবাবু মনোজকে অধীরবাবুর কাছে রেখে নির্দেশ দেন থানায় পাঠানোর। অনিলবাবু অন্যত্র চলে যান। সে সময়ে মনোজ ফোন করে বেলিয়া বাজার এলাকায় থাকা লোকজনকে খবর দেয়।
অভিযোগ, প্রায় চল্লিশ জন লোক হাজির হয় মনোজের ডাকে। তাদের মধ্যে অনেকে মদ্যপও ছিল। সকলে লাঠি, উইকেট, রড নিয়ে রে রে করে পুলিশের দিকে তেড়ে আসে। তাদের দাবি, মনোজকে অবিলম্বে ছেড়ে দিতে হবে। খবর পেয়ে ওসি অয়ন চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে পৌঁছন। র্যাফ নিয়ে যান অনিলবাবুও। ততক্ষণে অবশ্য আক্রমণকারীরা পালিয়ে গিয়েছে।
রাতে ওই এলাকায় জোর পুলিশি তল্লাশি শুরু হয়েছে। ঘটনার পরে সিভিক ভলান্টিয়াররা ডিউটি করতে ভয় পাচ্ছেন। এলাকায় রাতে তল্লাশির কারণে কিছু মানুষের ক্ষোভ ছিল দীর্ঘ দিন ধরে।