উজ্জ্বল জয়ধর
নিজের দোকান থেকেই এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। এই ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। তিনি খুন হয়েছেন বলেই প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ পুলিশের।
শুক্রবার দুপুরে নরেন্দ্রপুর থানার কালীবাজারের লেক গার্ডেন্স এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃত ব্যবসায়ীর নাম উজ্জ্বল জয়ধর (৪১)। দোকানের শাটার ভেঙে উজ্জ্বলবাবুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি কলকাতা পুলিশের বাঁশদ্রোণী
থানা এলাকায়।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে উজ্জ্বলবাবু বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত তিনি বাড়ি ফেরেননি। রাতেই উজ্জ্বলবাবুর স্ত্রী রুমাদেবী ও দাদা অপূর্ববাবু দোকানে এসে দেখেন বাইরে থেকে শাটারে একটি তালা দেওয়া। পরে তাঁরা আরও দু’টি তালা দোকানের শাটারে লাগিয়ে দিয়ে নরেন্দ্রপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। উজ্জ্বলবাবুর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও পরিবারের লোকজন তাঁর সঙ্গে রাতে যোগাযোগ করতে পারেননি। ফলে শুক্রবার সকালে ফের উজ্জ্বলবাবুর স্ত্রী নরেন্দ্রপুর থানায় আসেন। তার পরেই তদন্তকারী অফিসারেরা দোকানে গিয়ে শাটারের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দোকানের কোল্যাপসিব্ল গেটের সঙ্গে উজ্জ্বলবাবুর দেহ ঝুলতে দেখেন।
তদন্তকারীরা জানান, উজ্জ্বলবাবুর পা মাটিতে ঠেকে ছিল। দোকানের ভল্ট ভাঙা। সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক গায়েব। ভল্ট থেকে নগদ টাকা ও গয়না চুরি গিয়েছে। তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, সোনা ও নগদ টাকা লুট করার পরে উজ্জ্বলবাবুকে শ্বাসরোধ করে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রমাণ লোপাট করতেই হার্ড ডিস্কটি নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, আপাতদৃষ্টিতে উজ্জ্বলবাবুর গলায় একটি মাত্র কালশিটে পাওয়া গিয়েছে। উজ্জ্বলবাবুর স্ত্রী রুমাদেবীর কথায়, ‘‘বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় আমার স্বামী বলেছিলেন একটা বড় ‘পেমেন্ট’ পাবেন। তাই দোকানে তাড়াতাড়ি যাচ্ছেন। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ফোন করার পরেও ওঁর ফোন বেজে যায়। তার পরেই আমি ভাসুরকে নিয়ে দোকানে গিয়েছিলাম।’’ তদন্তকারীরা জানান, ওই দোকানের উল্টো দিকে একটি মন্দির আছে। সেখানকার সিসি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। উজ্জ্বলবাবুর দোকানের এক কর্মচারীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই ব্যবসায়ীর ফোনের কললিস্টও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাঁর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এবং একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।