থানায় আটক হওয়া শব্দবাজি দমকলের সাহায্যে জলে ভিজিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। ফাইল চিত্র
আট বছর আগের একদিন।
দক্ষিণ হাবড়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে প্রচুর শব্দবাজি উদ্বার করেছিল পুলিশ। পুলিশের গাড়ি করে বাজি থানায় আনা হয়। থানা চত্বরে গাড়ি থেকে সেই বাজি নামানোর সময়ে বিস্ফোরণ ঘটে। ৬ জন পুলিশ কর্মী-সহ ৯ জন জখম হয়েছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল, গাড়ি থেকে শব্দবাজি নামানোর সময়ে উপযুক্ত সতর্কতা নেওয়া হয়নি।
পাঁশকুড়া থানার সামনে মজুত রাখা বাজি ফেটে সিভিক ভলান্টিয়ারের মৃত্যুতে ফের উঠে আসছে হাবড়ার ঘটনার স্মৃতি। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৪ সালের ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন হাবড়া থানার পক্ষ থেকে শব্দবাজি উদ্ধারে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়।
হাবড়া শহর এলাকায় প্রতি বছর লক্ষ্মীপুজোর রাতে শব্দবাজির তাণ্ডব চলে। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাজির শব্দ, ধোঁয়ায় ব্যাহত হয় জনজীবন। যে বছরগুলিতে পুলিশি নজরদারি ও ধরপাকড় বেশি থাকে, সেই বছরগুলিতে অবশ্য শব্দের দাপাদাপি কিছুটা কমে বলে জানালেন স্থানীয় মানুষ। পুজোর আগের কয়েকদিন ধরে শব্দবাজি আটক করা হয়।
আগে সে সব বাজি থানায় এনে রাখা হত স্তূপীকৃত করে। কোনও রকম সাবধানতা নেওয়ার বালাই ছিল না। কয়েকদিন পরে তা নষ্ট করা হত। এর মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা থাকত।
কিন্তু এখন উদ্বার করা শব্দবাজি দিনের দিনই নষ্ট করে দেওয়া হয়। দমকল এসে খোলা মাঠে জল ঢেলে বাজি নষ্ট করে। গাড়িতে শব্দবাজি নিয়ে যাওয়ার সময়েও সতর্কতা নেওয়া হয় বলে দাবি পুলিশের। শব্দবাজি এক সঙ্গে বেশি মজুত করে গাড়িতে তোলা হয় না। গাড়িতে শব্দবাজির পাশে কেউ বসেন না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে দিনের দিন বাজি নষ্ট করা না গেলে থানার একটি পরিত্যক্ত ঘরে বালির মধ্যে তা রেখে দেওয়া হয়। পরে তা নিষ্ক্রিয় করা হয়।
বোমা উদ্ধারের ক্ষেত্রে থানায় এনে তা জল ও বালির মধ্যে রাখা হয়। পরে সিআইডির বম্ব স্কোয়াড এসে বোমা নষ্ট করে। লক্ষ্মীপুজো ছাড়া কালীপুজোর দিনগুলিতেও হাবড়া, অশোকনগর, গোবরডাঙায় দেদার শব্দবাজি ফাটর অভিযোগ ওঠে। এ ক্ষেত্রেও পুলিশ তল্লাশি চালায়। শব্দবাজি আটক করে। দ্রুত নষ্ট করে দেয়। বারাসতের পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বারাসত পুলিশ জেলায় কোনও থানা শব্দবাজি আটক করলে সঙ্গে সঙ্গে আদালতকে জানানো হয় এবং সিআইডির অ্যাপে আপলোড করে দেওয়া হয়।’’
শব্দবাজির পরিমাণ কম হলে কোনও জায়গায় নিরাপদে রেখে দেওয়া হয়। পরে তা নষ্ট করা হয়। উদ্ধার হওয়া শব্দবাজির পরিমাণ বেশি হলে দমকল জল ঢেলে তা নিষ্ক্রিয় করে দেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে হলদিয়া থেকে একটি এজেন্সি এসে সে সব নষ্ট করে দেয় বলেও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।