মারামারির-পরে: বাসন্তীতে। নিজস্ব চিত্র
একটি খাল দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারামারিতে জখম হল দু’পক্ষের প্রায় ৮ জন। দু’টি বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাসন্তীর মসজিদবাটি এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। আহতেরা ক্যানিং ও বাসন্তী হাসপাতালে ভর্তি।
এই ঘটনায় স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা তথা বাসন্তীর প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মান্নান শেখ ও মসজিদবাটি পঞ্চায়েতের প্রধান গৌর সর্দারের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এল। কিছু দিন আগে বাসন্তীর হেতালখালিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রাণ হারিয়েছে এক শিশু-সহ দু’জন। এর মাসখানেক আগে চুনাখালিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে মারামারিতে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। সে সবের রেশ এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে আতঙ্ক বাড়ল এলাকাবাসীর।
তবে মান্নান বলেন, ‘‘একটি খাল দখল নিয়ে দুই মসজিদ কমিটির মধ্যে গণ্ডগোল হয়। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমি এই ঘটনায় কোনও ভাবে জড়িত নই।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকায় একটি সরকারি খাল দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে গণ্ডগোল চলছিল। এলাকায় একটি পুরনো মসজিদ আছে। যার কমিটিতে আছেন ওসমান শেখ, ইদ্রিস শেখ, আবদিন আখন্দ-সহ অন্যরা। তাঁরা মান্নানের অনুগামী।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই খালে মাছ চাষ করা হয়। তা থেকে যা আয় হয়, সেটা দিয়ে মসজিদের উন্নয়ন থেকে শুরু করে এলাকার দুঃস্থ শিশুদের বইপত্র, জামাকাপড় কিনে দিত মসজিদ কমিটি। অভিযোগ, ওই কমিটি থেকে ইসরাফিল কয়াল, রাজ্জাক কয়াল, রাজীব মোল্লা-সহ অনেকে বেরিয়ে এসে একটি নতুন কমিটি তৈরি করেন। এঁরা আবার মসজিদবাটি পঞ্চায়েতের প্রধান গৌর সর্দারের লোকজন। তাঁরা এলাকায় আরও একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। অভিযোগ, নতুন মসজিদ কমিটি ওই খাল দখল করে এ দিন খালের পানা তুলে পরিষ্কারের কাজ শুরু করে। তখন তাঁদের বাধা দেয় পুরনো কমিটি। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তারপরেই মারামারি বেধে যায়।
গৌর বলেন, ‘‘একটি সরকারি খাল দখল করে যুব তৃণমূল কর্মীরা। সেই নিয়ে আমাদের কিছু কর্মী প্রতিবাদ করলে ওরা আমাদের কর্মীদের মারধর করে। সিপিএম, আরএসপি থেকে যাঁরা আমাদের দলে এসেছে তাঁরাই আমাদের কর্মীদের মারধর করছে।’’