প্রতীকী ছবি।
সন্ধ্যাবেলায় মশারির ভিতর পড়তে বসতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। রাতে তো মশারি না টাঙিয়ে ঘুমানোর জো নেই। এমনি দাপট হাবরার মশাদের।
আর তাতেই আশঙ্কা বাড়ছে এলাকাবাসীর। এ বারও কি ডেঙ্গি ম্যালেরিয়া থাবা বসাবে হাবরায়!
এর আগেও এলাকাবাসীর অভিযোগ ছিল, পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়েছিল। এ বছর কি কোনও ব্যবস্থা নিল পুরসভা?
এলাকার বাসিন্দাদের মতে, নিকাশি নালাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ার জন্যই মশার উৎপাত বেড়েই চলেছে। মশা মারার জন্য পুরসভার কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
স্থানীয় প্রফুল্লনগর এলাকার বাসিন্দা স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘নালাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ার জন্যই মশার উপদ্রব বাড়ছে। নালাগুলি পরিষ্কার করে সেখানে ব্লিচিং পাউডার ও কীটনাশক স্প্রে করলে মশার উপদ্রব অনেকটাই কমবে বলে মনে হয়।’’
এলাকার মানুষের দাবি, শহরের নিকাশি নালাগুলি বেশির ভাগই অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা হয়েছে। সেখান দিয়ে জল বের হয় না। নালার মধ্যে অবর্জনা ও প্লাস্টিকও পড়ে থাকে। বর্ষার আগে ছাড়া সে ভাবে নালাগুলি পরিষ্কার হয় না বলে অভিযোগ। তবে নোংরা ফেলার বিষয়ে মানুষও সচেতন নয়। অনেকেই নালায় এবং যত্রতত্র নোংরা ফেলে থাকেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় কামারথুবা এলাকার বাসিন্দা তথা চিকিৎসক দীপক কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমরা নিজেরাই সচেতন নয়। মানুষ নিজের বাড়ি ও আশপাশটা যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন তা হলে মশার উপদ্রব অনেকটা কমে যায়। এই সময় সামান্য জলেও মশা বংশবিস্তার করে।’’
কী বলছে পুরসভা?
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যেই পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা এসে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেবেন। মে মাসের শুরু থেকেই ওই সব স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাবেন মশা থেকে বাঁচতে কী করা উচিত। মাসে ১-৫ এবং ১৫-২০ তারিখ তাঁরা প্রত্যেকের বাড়ি যাবেন।
পুরসভার পরিবারের সংখ্যা প্রায় চল্লিশ হাজারের মতো। নিকাশি নালা নিয়মিত পরিষ্কারের জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে সাফাই কর্মী ছাড়াও অস্থায়ী কিছু কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। প্রতিটি বাড়ি থেকে রোজ আবর্জনা সংগ্রহের কাজ দ্রুত শুরু হচ্ছে। পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘শীঘ্রই মশা মারতে কীটনাশক, স্প্রে ব্লিচিং ছড়ানোর কাজ শুরু হচ্ছে। দু’টি কামান আছে তাও ব্যবহার করা হবে।’’ রোজ না হলেও নিয়মিত নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হয় বলে তাঁর দাবি। যদিও এই পুরসভায় কোনও পতঙ্গবিদ নেই। যাঁরা মশা নির্ণয় করতে পারেন।
তবে পাশাপাশি যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলার বিষয়ে মানুষকেও সচেতন হতে হবে। না হলে এই রোগ ঠেকানো মুশকিল।