রাত সাড়ে ১০টা। কুলতলি থানার সামনের মাঠে মঞ্চ বেঁধে চলছে জলসা। সাউন্ডবক্সের দাপটে পাড়া কাঁপছে। হিন্দি গানের সঙ্গে চলছে উদ্দাম নাচ। সেই নাচে সামিল হতে দেখা গেল সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীদেরও।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, রাত ১০টার পরে প্রকাশ্যে শব্দযন্ত্র বাজানো যাবে না। এ ব্যাপারে নজরদারির দায়িত্ব রয়েছে পুলিশেরই হাতে।
কিন্তু কুলতলি থানা-লাগোয়া প্রাচীন কালীমন্দিরে পুজোর এই বিজয়া সম্মিলনীর জলসায় নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠল খোদ পুলিশের দিকেই। অনুষ্ঠানের ছবি তুলতে গেলে সংবাদমাধ্যমকে বাধা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। সে কথা অবশ্য মানেনি পুলিশ।
দিন কয়েক আগে কাটোয়া থানার সামনে এমনই এক অনুষ্ঠান হয়েছিল। সেখানেও সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীদের হিন্দি গানের তালে নাচতে দেখা গিয়েছিল। মাইক ও সাউন্ডবক্সের সেই অনুষ্ঠানের আওয়াজে গত ছ’দিন ধরে অতিষ্ঠ হয়েছিলেন এলাকাবাসী বলে অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষত অসুবিধায় পড়ছেন স্কুলপড়ুয়া ও প্রবীণেরা।
কুলতলি থানার পাশেই রয়েছে এই প্রাচীন কালীমন্দিরটি। থানার উদ্যোগেই এই জলসার আয়োজন করা হয়েছিল। মাইক ও সাউন্ডবক্সে সেই অনুষ্ঠানের আওয়াজে অতিষ্ঠ এলাকার লোকজন, অভিযোগ এমনটাই।
যদিও ওই থানা লাগাোয়া মাঠটির এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনও জনবসতি নেই। কিন্তু মাঠের সামনেই পুলিশ আবাসনে অনেকে পরিবার নিয়ে থাকেন। তাঁদের এ দিন সমস্যায় পড়তে হয়। শুধু তাই নয় পথচলতি মানুষও সাউন্ডবক্সের আওয়াজে অতিষ্ঠ।
সিপিএমের বিধায়ক রামশঙ্কর হালদার বলেন, ‘‘নিয়মরক্ষকই যেখানে উদ্দাম নৃত্যে ব্যস্ত, সেখানে আইন শৃঙ্খলার কী আর উন্নতি হবে!’’ এই অনুষ্ঠানের জন্য পুলিশ লক্ষাধিক টাকা খরচ করেছে বলেও তাঁর অভিযোগ।
কুলতলি থানার ওসি ফোন ধরেননি। তবে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, রাত ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলেছে। অনুষ্ঠানের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কিনা, তাঁর জানা নেই। অনুষ্ঠানের অনুমোদনের বিষয়ে বারুইপুর মহকুমাশাসক শ্যাম পরভিন বলেন, ‘‘ওই বিষয়ে স্থানীয় বিডিও বলতে পারবেন।’’ বিডিও দেবনাথ অবশ্য বলেন, ‘‘অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা, আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানান জেলা পুলিশের এক আধিকারিক।