ছি-ছি: রাস্তার ধারে এ ভাবেই পড়ে থাকে আবর্জনা। বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
সকাল হতেই এলাকায় চলে আসছে পুরসভার ময়লা ফেলার গাড়ি, রাস্তার পাশে রাখা ডাস্টবিনও। কিন্তু এত ব্যবস্থা সত্ত্বেও বাড়ির সামনে, রাস্তার উপরে ডাঁই করে রাখা ময়লা। তাতে ভনভন করছে মাছি। প্লাস্টিক বর্জন হয়েছে এলাকায়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা মানছেন না কেউ। রাস্তার পাশে নর্দমায় সেই প্লাস্টিক ফেলা হচ্ছে। যার ফলে নিকাশির জল জমে গিয়ে তাতে বাসা বেঁধেছে মশা। স্রেফ সচেতনতার অভাবেই এমন হাল উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতের আনাচে কানাচে।
কেন এই হাল, তা নিয়ে প্রশ্ন করতে বিরক্ত বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাড়ি, অফিস-কাছারি থেকে প্রতিদিন ময়লা নিয়ে আসার ব্যবস্থা রয়েছে। দূষণ যাতে না ছড়ায়, সে জন্য টাকা খরচ করে সেই জঞ্জাল নষ্টও করা হচ্ছে। সর্বত্র ময়লা ফেলার ডাস্টবিন রয়েছে।’’ সুনীলবাবুর প্রশ্ন, ‘‘এত কিছুর পরেও যদি সামান্য সচেতনতা না থাকে, তাহলে কী করা যাবে?’’
বারাসতের উপর দিয়ে আন্তর্জাতিক সড়ক ছাড়াও গিয়েছে জাতীয় ও একাধিক রাজ্য সড়ক। সেই সব রাস্তার পাশে ডাঁই করে ফেলা হয় বাড়ির বর্জ্য, নোংরা। তা পচে দুর্গন্ধ বার হয়। এ দিকে, জেলা সদর বলে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সদর অফিসও রয়েছে এখানে। আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়ে সে সব অফিসের সামনেও। দেখা গিয়েছে ডাকবাংলো মোড়, চাঁপাডালি মোড়, কলোনি মোড়, হেলা বটতলার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতেও অবলীলায় ফেলা হয়েছে নোংরা। সঙ্গে বিয়েবাড়ি থাকলে তার উচ্ছিষ্ট তো রয়েইছে।
এলাকার এক দোকানি জানালেন, পুরসভা থেকে মাইকে প্রচার করা হয়েছিল, এলাকার কোনও দোকান থেকে পলিপ্যাকে মালপত্র বিক্রি করা হবে না। নাগরিকদেরও বলা হয়েছিল প্লাস্টিক ব্যবহার না করতে। অন্যথায় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। পাশাপাশি, দোকানে দোকানে ‘পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ’ বলে পোস্টারও সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। ওই দোকানির কথায়, ‘‘কিছুদিন সব বন্ধ ছিল, কিন্তু সচেতনতা আর নজরদারির অভাবে ক’দিন পরে ফের সব চালু হয়ে গিয়েছে।’’
পুরসভার তরফে মাঝেমধ্যেই প্লাস্টিকের ব্যাগ বাজেয়াপ্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন সকালে ৩৫টি অটোরিকশা গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করে। এ ছাড়া, প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের ব্যবস্থাপনায় একাধিক ভ্যানে প্রত্যেক বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। সেই সব নোংরা বড় ট্রেলারে ফেলে নষ্ট করে মণ্ড তৈরি করা হয়। তার পরে সেই মণ্ড বামনমুড়ো এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলে আসা হয়। অশনিবাবুর কথায়, ‘‘সব চেষ্টাই করছি। তবে নিজের বাড়ির সামনে, নিজের এলাকা পরিষ্কার রাখাটা তো নাগরিকদেরও কর্তব্য। সেটুকু তো করতে হবে।’’