ফেটেছে-দেওয়াল: আগুনে পোড়ার পরে। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কাটা ছিলই। কারণ, ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া বেরোনো বন্ধ হয়নি। বৃহস্পতিবার ফের আগুনে আতঙ্ক ছড়াল নিউ ব্যারাকপুরের যুগবেড়িয়ার পোড়া চেয়ার কারখানায়। তবে দমকলের একটি ইঞ্জিন দ্রুত পৌঁছে কিছু ক্ষণের মধ্যেই আগুন আয়ত্তে আনে।
এ দিনও খোঁজাখুঁজি শেষে নিখোঁজ পাঁচ কর্মীর কোনও সন্ধান মেলেনি। পুলিশ মনে করছে, সময় যত গড়াচ্ছে, ওই কর্মীদের খুঁজে পাওয়ার আশা ততই ক্ষীণ হচ্ছে। নিখোঁজ কর্মীদের আত্মীয়েরা এখনও কারখানার বাইরে অপেক্ষায় রয়েছেন।
পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানাটিতে দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হত। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যারাকপুর (২) পঞ্চায়েত সমিতি থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার কথা। কিন্তু এ বছর তাঁরা ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণই করাননি। ব্যারাকপুর (২) পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সোমা ঘোষ জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ কখনওই দাহ্য পদার্থ ব্যবহারের অনুমতি নেননি। সে কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চেয়ার কারখানার দোতলায় টন টন লোহা-ইস্পাতের কাঁচামাল এবং ছাই রয়েছে। পাঁচ কর্মীর দেহাবশেষ যদি কোনও ভাবে পাওয়া যায়, সে কথা ভেবে ওই ধ্বংসস্তূপ সাবধানে সরাতে হচ্ছে। মঙ্গলবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা এসে কী ভাবে উদ্ধারকাজ চালাতে হবে, তার পরামর্শ দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুলিশ।
আগুন আয়ত্তে এলেও দোতলায় ধ্বংসস্তূপে ধোঁয়া ছিল। বৃহস্পতবার সকালে উদ্ধারকাজ শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই কারখানার একটি কোণে ছাইয়ের গাদা থেকে আগুন জ্বলে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্ক ছড়ায় উদ্ধারকারী দলের মধ্যে। খবর যায় দমকলে। একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়।
দমকল আধিকারিকেরা বলছেন, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্লাইউড বা অন্য দাহ্য পদার্থ চাপা পড়ে রয়েছে। হাওয়া পেয়ে ফের তাতে আগুন ছড়ায়। তবে তা তাড়াতাড়ি নিভে যাওয়ায় আতঙ্ক বেশিক্ষণ থাকেনি। দমকল জানিয়েছে, পুড়ে যাওয়া ওই বাড়িটি কোনও ভাবে ব্যবহার করা যাবে না। কারণ, পুরো বাড়িটিতে বিপজ্জনক ভাবে ফাটল ধরেছে। একটি অংশ ঝুরঝুরে হয়ে ভেঙে পড়ছে। উদ্ধারকাজ শেষ হলে প্রশাসনই বাড়িটি ভেঙে দিতে পারে।
এ দিকে, পাঁচ দিন পরেও নিখোঁজ কর্মীদের সন্ধান না মেলায় পরিজনেদের ক্ষোভ উত্তরোত্তর বাড়ছে। তাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁদের কোনও তথ্যই দেওয়া হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কারখানার মালিক বা ম্যানেজারের নাগাল পাওয়া যায়নি। তবে, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা।