অজমেঢ় শরিফের টানে দেশছাড়া

শুনেছিল অজমেঢ় শরিফের কথা। দেখার ইচ্ছে হয়েছিল। তারপরে দেশ-গাঁ ছেড়ে দুই কিশোর বেরিয়ে পড়ে অজানা জায়গার টানে। সঙ্গে টাকা-পয়সা না থাকায় কখনও কুলির কাজ করেও পেট ভরিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৬ ০৭:৪৩
Share:

শুনেছিল অজমেঢ় শরিফের কথা। দেখার ইচ্ছে হয়েছিল। তারপরে দেশ-গাঁ ছেড়ে দুই কিশোর বেরিয়ে পড়ে অজানা জায়গার টানে। সঙ্গে টাকা-পয়সা না থাকায় কখনও কুলির কাজ করেও পেট ভরিয়েছে। শেষমেশ অবশ্য দিল্লি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে বাংলাদেশি কিশোর। বৃহস্পতিবার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে দেশে। আরও দুই কিশোরও বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে পড়েছিল অজমেঢ় শরিফের টানে। ধরা পড়ে তারাও। বছর পনেরোর এক কিশোরীকে পাচার করা হয়েছিল দিল্লিতে। তাকে উদ্ধার করা হয়। সকলেই বৃহস্পতিবার ফিরেছে নিজের দেশে।

Advertisement

দিল্লির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে নানা আইনি জটিলতা কাটিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছে সকলে। সংস্থার কর্ণধার সুনীল দেওধর বলেন, ‘‘ওরা কমবেশি সকলেই প্রায় দু’বছর দিল্লির শিশুহোমে ছিল। আমরা ওদের বাবা-মাকে খুঁজে বের করি।’’

নাটোরের তেরো বছরের কিশোর এ ক’দিন বিদেশ-বিভুঁইয়ে থেকে চোস্ত হিন্দি বলতে শি‌খে নিয়েছে। সে জানায়, অজমেঢ় শরিফের কথা ভিডিও ক্যাসেটে দেখেছিল। বাড়িতে জানলে সেখানে যাওয়ার অনুমতি মিলত না। তাই ঠিক করে, না বলেই যাবে। বেনাপোল হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ঢুকে পড়ে পেট্রাপোল বন্দরে। সেখান থেকে ট্রাক ধরে বনগাঁ। তারপরে নানা পথ ঘুরে শেষে দিল্লি পৌঁছলেও স্বপ্নের সেই জায়গা আর দেখা হয়ে ওঠেনি। তার আগেই ধরা পড়ে যায় দিল্লি পুলিশের হাতে।

Advertisement

তা হলে অজমেঢ় শরিফ ভ্রমণের কী হবে?

ছেলেটি জানিয়ে গিয়েছে, চোরাপথে আর নয়। বড় হয়ে পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে ফের দেখতে আসবে দরগা।

ঢাকার বছর পনেরোর দুই কিশোর মিনি ট্যাক্সি চালত। এলাকার এক ব্যক্তির কাছে অজমেঢ় শরিফের গল্প শোনে। হাজারখানেক টাকা নিয়ে তারাও বেরিয়ে পড়ে হিলি সীমান্ত হয়ে। ট্রেনে চেপে পৌঁছয় দিল্লিতে। সাধের জায়গা দেখা হয়নি তাদেরও। পরে আসার ইচ্ছে আছে বলে জানিয়ে গিয়েছে দু’জনেই।

উদ্ধার হওয়া কিশোরীর বাড়ি বড়িশাল। মা থাকেন খুলনায়। কী ভাবে কয়েক বছর আগে সে এ দেশে পৌঁছেছিল, তা পুরোপুরি মনে নেই মেয়েটির। পুরনো কথা মনে করতেও চায় না। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিচারিকার কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভাবী ঘরের মেয়েটিকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করার জন্য এ দেশে আনা হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement