Family Member

একদিন ফিরে আসবেই প্রিয়জন, আশায় দুই পরিবার

রোজগারপাতি বাড়লে একটু সুরাহা হয়। আশায় বুক বেঁধে তাই গুজরাতে পাড়ি দিয়েছিলেন ঘোলাপাড়ার সঞ্জয় পড়ুয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:২৪
Share:

অপেক্ষা: সঞ্জয়ের বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় তার পরিবার। ছবি: নবেন্দু ঘোষ

আশায় রয়েছে দুই পরিবার। একদিন না একদিন ঠিক ফিরে আসবে তাদের প্রিয়জন। হাসনাবাদ থানার বিশপুর ঘোলাপাড়া। এই ঘোলাপাড়া থেকে নিরুদ্দেশ দু’জন। এক যুবক গিয়েছিলেন ভিন্‌ রাজ্যে। রোজগারের আশায়। মায়ের বকুনি শুনে বাড়ি ছেড়েছিল এক কিশোরী। বছরের পর বছর কেটেছে। ফেরেনি কেউই।

Advertisement

সংসারে অভাব। রোজগারপাতি বাড়লে একটু সুরাহা হয়। আশায় বুক বেঁধে তাই গুজরাতে পাড়ি দিয়েছিলেন ঘোলাপাড়ার সঞ্জয় পড়ুয়া। কেটে গিয়েছে তিন বছর। পরিবারের সঙ্গে নেই কোনও যোগাযোগ। থানায় যেতে যেতে চটি ক্ষয়েছে। লাভ হয়নি। জীবনযুদ্ধে নামতে হয়েছে যুবকের স্ত্রীকে। সন্তানদের মানুষ করতে তিনি এখন পরিচারিকার কাজ করেন। সঞ্জয়ের মা শান্তি বললেন, ‘‘অভাবের সংসারে কিছু উপার্জনের জন্য ছেলে পাশের পাড়ার এক যুবকের সঙ্গে গুজরাতে কাজে গিয়েছিল। তারপর আর ফেরেনি। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও করেনি কখনও। যার সঙ্গে ছেলে গিয়েছিল তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে এখন বলে, কিছুই জানে না।’’

সঞ্জয়ের বাড়ি ফেরার পথ চেয়ে বসে আছেন তাঁর স্ত্রী,সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা-মা। যখন জানলেন ছেলে নিখোঁজ,তখন পুলিশের দ্বারস্থ হননি? শান্তি বলেন, “ যখন হারিয়ে যায় তখন একবার প্রতিবেশীর সঙ্গে হাসনাবাদ থানায় গিয়েছিলাম । তবে থানা থেকে বলেছিল, যে থানা এলাকায় হারিয়েছে, সেখানে অভিযোগ করতে হবে। ওই কথা শুনে চলে আসি।’’ বাইরের রাজ্যে গিয়ে কোথায় কী করতে হবে তা জানা নেই শান্তির। তাই কিছু আর করেনওনি। শুধু আশায় বুক বেঁধে বসে রয়েছেন। নিখোঁজ যুবকের স্ত্রী শ্যামলী পড়ুয়া বলেন, “ স্বামী নিখোঁজ। তাই এখন বাচ্চা মানুষ করতে ও সংসার চালাতে আমাকেই বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করতে হচ্ছে। ছেলে মাঝে মধ্যে প্রশ্ন করে আমার বাবা কোথায়। শুধু সান্ত্বনা দিই একদিন আসবে।” হাসনাবাদ থানার পুলিশ সূত্রে খবর, লিখিত ভাবে ছবি-সহ থানায় জানালে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

Advertisement

প্রায় একই অবস্থা ওই পাড়ারই বাসিন্দা জ্যোৎস্না জানার। ২০০৯ সাল। জ্যোৎস্নার মেয়ে দীপিকা তখন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। মেয়েকে শাসন করতে একদিন মারধর করেন মা। অভিমানে একদিন দুপুরে নিখোঁজ হয়ে যায়। তার বয়স তখন ১১ বছর। মেয়েকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজছে তার পরিবার। থানাতেও ছবি-সহ লিখিত ভাবে জানানো হয়। তবে এখনও কোনও খোঁজ মেলেনি। জ্যোৎস্না বলেন, “জানি না ও কেমন আছে, কোথায় আছে। পুলিশ আজও প্রত্যেক বছর ডেকে জিজ্ঞাসা করে আমরা কোনও খবর পেলাম কিনা। আমরা আজও কোনও ফোন বা কোনও খবর পাইনি। মাঝে মাঝে মনে হয় সে দিন যদি ও ভাবে ওকে শাসন না করতাম তা হলে হয় তো ও আমার কাছে থাকত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement