Road Accident

সামনেই বিয়ে ছিল নাজমার, দুর্ঘটনার খবরে বদলে গেল পরিবেশ

কারিবুল তাঁর হবু স্ত্রী নাজমা খাতুন ও নাজমার বৌদি সেরিনা বিবিকে সঙ্গে নিয়ে মোটরবাইকে করে হাড়োয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে যাচ্ছিলেন।

Advertisement

সামসুল হুদা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪৩
Share:

শোকাহত নাজমার পরিবার। নিজস্ব চিত্র।

কয়েক দিন পরেই ছিল বিয়ে। সেই মতো তোড়জোড় চলছিল বাড়িতে। বিয়ের কেনাকাটা হচ্ছিল। আত্মীয়-স্বজনদের নিমন্ত্রণ করা হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকালে পথ দুর্ঘটনা বদলে দিল সব কিছু। ননদ-বৌদির মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার।

এ দিন মৃতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, সদ্য মেয়ে ও পুত্রবধূকে হারিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন পানাপুকুরের বাসিন্দা মির নিজামুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী। বিলাপ করছেন। কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই। বার বার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন নিজামুদ্দিনের স্ত্রী। নিজামুদ্দিনের মেয়ে নাজমা খাতুনের সঙ্গে বিয়ের ঠিক হয়েছিল নিমকুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা কারিবুল মোল্লার। কয়েক দিন পরেই ছিল সেই শুভক্ষণ।

Advertisement

কারিবুল বাস কন্ডাক্টর। তিন ভাই ও তিন বোন। ভাইদের মধ্যে ছোট কারিবুল। এ দিন কারিবুল তাঁর হবু স্ত্রী নাজমা খাতুন ও নাজমার বৌদি সেরিনা বিবিকে সঙ্গে নিয়ে মোটরবাইকে করে হাড়োয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে যাচ্ছিলেন। উত্তর কাশীপুর থানার জামিরগাছির কাছে বাইকের পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি ডাম্পার। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাজমা ও সেরিনার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কারিবুলকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানাচ্ছেন, নাজমা ও তাঁর বৌদি খুবই মিশুকে ছিলেন। গ্রামের সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। গ্রামের মেয়ের আসন্ন বিয়ে নিয়ে মেতে ছিলেন পাড়া-পড়শিরাও।

দু’বছর আগে কলকাতার মেটিয়াব্রুজ এলাকার বাসিন্দা জয়নালের মেয়ে সেরিনা ভালবেসে বিয়ে করেন পানাপুকুর গ্রামের বাসিন্দা মির নিজামুদ্দিনের ছেলে আলিমুদ্দিন মিরকে। ওই গৃহবধূ কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আলিমুদ্দিন ও তাঁর বাবা নিজামুদ্দিন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন আলিমুদ্দিনও। নিজামুদ্দিনের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ভাই-বোনের মধ্যে বড় আলিমুদ্দিন। বোনেদের মধ্যে বড় নাজমারই বিয়ের ঠিক হয়েছিল। ছোট বোন দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।

নিজামুদ্দিনের প্রতিবেশী তথা এলাকার জনপ্রতিনিধি কাশেফুল করুব খান ওই বাড়িতে যান সমবেদনা জানাতে। তিনি বলেন, ‘‘গরিব পরিবারের দুই তরুণীর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। আমি এই পরিবারের পাশে থেকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করব। কী ভাবে দুই পরিবারের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement