তাপস মণ্ডলের ভাই বিভাস মণ্ডলের পেল্লায় বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
মাইশোরার পাতন্দা গ্রামে তাপস মণ্ডলের ভ্রাতৃবধূ পারমিতা মণ্ডলের টিচার্স ট্রেনিং কলেজ রয়েছে। পারমিতার স্বামী তথা তাপসের ভাই বিভাস মণ্ডল কলেজটি দেখাশোনা করেন। কলেজের ম্য়ানেজারের বিস্ফোরক অভিযোগ, ওই কলেজে টাকার বিনিময়ে শিক্ষকতার যোগ্যতার ভুয়ো সার্টিফিকেট পাওয়া যেত। সেই সঙ্গে কলেজের শিক্ষক থেকে কর্মীদের নিয়মিত বেতন দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
এক দশক আগে পাতন্দা গ্রামে স্থানীয় এক জমিদার পরিবারের থেকে বেশ কয়েক বিঘা জমি কেনেন পারমিতা। তাঁর বাবা প্রভাকর জানাই মেয়ের নামে জায়গাটি কিনেছিলেন বলে জানা যায়। প্রভাকরের বাড়ি হাওড়ার শ্যামপুরে হলেও তিনি থাকতেন বাগনানে। ২০১৪ সালে পাতন্দা গ্রামে ‘রাসবিহারী কলেজ অফ এডুকেশন’ নামে একটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ খোলেন প্রভাকর। মেয়ের নামে কলেজ হলেও প্রভাকরের জামাই তথা তাপসের ভাই বিভাসই কলেজটি দেখভাল করেন। বিভাসের কলেজের ঠিক পাশেই দাদা তাপসের একটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ তৈরি হয় ২০১৮ সালে। মহিষবাথানে তাপসের ট্রেনিং সেন্টারে কাজ করতেন কামদুনি কান্ডের প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী কয়াল। পাঁচ-ছ’মাস বেতন না পেয়ে সেই চাকরি ছেড়ে দেন মৌসুমী। এবার একই অভিযোগ উঠেছে তাপসের ভাইয়ের কলেজেও। শুধু তাই নয়, তাপসের ভাইয়ের কলেজের মাধ্যমে জাল সার্টিফিকেট পাওয়া যেত বলে অভিযোগ করেছেন খোদ ওই কলেজের ম্যানেজার অমর দাস। এমনকী কলেজের শিক্ষকদের সঠিক বেতন দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ।
রবিবার অমর বলেন, ‘‘এই কলেজে নানা ধরনের অনৈতিক কাজ হয়। টাকা দিলেই এখানে এম ফিল সহ বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র মেলে। প্রভাকর জানা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু আধিকারিককে ম্যানেজ করে এই কারবার করেন। আমাকে তিন বছর বেতন দেয়নি। শিক্ষকদের বেতনও অনিয়মিত। অথচ বিভাস মণ্ডল কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি তৈরি করছেন।’’
যদিও অমর দাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কলেজের সভাপতি প্রভাকর জানা। তাঁর দাবি, ‘‘আমার কলেজে কোনও অনৈতিক কাজ হয় না। অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। বরং অমর দাস কলেজের বিভিন্ন কাজ থেকে কমিশন নিয়ে আমাদের সাথে আর্থিক প্রতারণা করেছেন। আমরা তা ধরে ফেলায় উনি আর কলেজে আসেননি। এখন আমাদের হেয় করতে এ সব বলছেন।’’
সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশে প্রাথমিকের চাকরি খুইয়েছেন তাপসের ভ্রাতৃবধূ পারমিতা। তাপসই প্রভাব খাটিয়ে পারমিতাকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে প্রভাকর বলেন, ‘‘তাপস মণ্ডল মাঝেমধ্যে এখানে আসতেন। ওঁর হাত ধরে আমার মেয়ের চাকরি হয়েছিল এ অভিযোগ ঠিক নয়।’’