স্তব্ধ: দাঁড়িয়ে আছে ট্রাকের সারি। নিজস্ব চিত্র
এক মাস পার হল না। পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশের সঙ্গে ফের বন্ধ হয়ে গেল পণ্য রফতানি। বুধবার সকাল থেকে এ পার থেকে পণ্য নিয়ে কোনও ট্রাক বেনাপোলে ঢুকতে পারেনি। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের রফতানিকারীদের একাংশ এ দেশ থেকে পণ্য বোঝাই ট্রাক বেনাপোলে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় বাণিজ্যের কাজ থমকে যায়।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের দিক থেকে কোনও ট্রাককে পেট্রাপোলে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। তার ফলে বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁদের। এ দিন তাঁরা জানিয়ে দেন, বেনাপোল থেকে পেট্রাপোলে ট্রাক প্রবেশের সবুজ সঙ্কেত না মেলা পর্যন্ত এ দেশের ট্রাককে ও দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
লকডাউন পর্বে ৭৫ দিন বন্ধ থাকার পরে দীর্ঘ জটিলতা কাটিয়ে ৭ জুন থেকে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে শুরু হয়েছিল পণ্য রফতানির কাজ। ধীরে ধীরে তার গতিও বাড়ছিল। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রফতানি চালুর দাবি জানিয়ে ‘বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ এ দেশের প্রশাসনকে আগেই চিঠি দিয়েছিল। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেনাপোল বন্দরে এই মুহূর্তে পণ্য নিয়ে ৭০০-৮০০ বাংলাদেশি ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, “পণ্য রফতানি শুরু না হওয়ায় আমাদের আর্থিক ক্ষতি বাড়ছে। লরির যন্ত্রপাতি বিকল হচ্ছে।”
সাজেদ জানিয়েছেন, বেনাপোলে আটকে থাকা বাংলাদেশি ট্রাকের মধ্যে রয়েছে তাঁতের শাড়ি, ওড়না, নকশি কাঁথা, বিভিন্ন পোশাক সামগ্রী, চট, মাছ ধরার জাল। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের দাবি, বেনাপোল বন্দর এলাকা এখন করোনামুক্ত, গ্রিন জ়োনে রয়েছে। ফলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। ট্রাক চালকেরা সুরক্ষা পোশাক পরেই ভারতে ঢুকবেন। বাংলাদেশ ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন, ভারতীয় চালকেরা পণ্য নিয়ে বেনাপোলে ঢুকতে পারলে ও পারের চালকেরা কেন পেট্রাপোলে যেত আসতে পারবেন না?
এ পারের ব্যবসায়ীরাও চাইছেন, ও পার থেকে পণ্য আমদানি শুরু হোক। ‘পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, “আমরা চাই, বেনাপোল থেকে পণ্য রফতানি শুরু হোক। এখানকার অনেক ব্যবসায়ী এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।” ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পেট্রাপোলের ম্যানেজার শুভজিৎ মণ্ডল বলেন, “পণ্য আমদানির কাজ শুরু করার জন্য রাজ্যের প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা আসেনি। রাজ্যের কোনও স্থলবন্দর থেকেই পণ্য আমদানির জন্য রাজ্য সরকার অনুমতি দেয়নি।”
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি গোপাল শেঠ জানান, ও পার থেকে পণ্য আমদানি শুরু করার জন্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে তিনি চিঠি দিয়েছেন।