অসম্পূর্ণ: ভাঙড় কাটা খালের উপরে অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে বাড়জুলি কামারগাঁতি সেতু। নিজস্ব চিত্র।
ভাঙড়ের কাটা খালের উপরে তৈরি হয়েছে কংক্রিটের সেতু। কিন্তু দু’দিকের রাস্তার সঙ্গে তার সংযোগ করা হয়নি। তৈরি হয়নি সেতুর সংযোগকারী রাস্তাও। ফলে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ।
সেতুর একপাশে আগাছায় ঢেকে গিয়েছে শিলান্যাসের সাক্ষ্য বহন করছে ফলকটি। সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানার কামারগাঁতি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় ১ ব্লকের বাড়জুলি গ্রামের মধ্যে অবস্থিত ভাঙড়ের কাটা খালের উপরে সেতু নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার। এ জন্য বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা। শিলান্যাস করেন তৎকালীন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর ও ভূমি ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। কাজও শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে সেতুর কাজ শেষ হয়ে গেলেও জমি জটের জেরে সেতুর সংযোগকারী রাস্তা তৈরি হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। ফলে আজও চালু হল না সেতু।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি নির্বাচনের আগে সেতুর কাজ সমাপ্ত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও গত বারো বছরেও তা শেষ হয়নি। খালের উপরে দেখা যায়, কংক্রিটের সেতু, কিন্তু তার সংযুক্ত কোনও রাস্তা নেই। অনেকের অভিযোগ, নকশা অনুযায়ী যে ভাবে সেতু নির্মাণ করার কথা ছিল, তা হয়নি। সেতুটি এতটাই সরু, দু’টি গাড়ি এক সঙ্গে পারাপার করতে অসুবিধায় পড়বে। অনেকের অভিযোগ, তৃণমূলের ছত্রচ্ছায়ায় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজেদের বাড়ি বাঁচানোর জন্য সেতুর সংযোগকারী রাস্তা তৈরিতে বাধা দিচ্ছেন।
এ দিকে, এত দিন তৈরি হয়ে পড়ে থাকা সেতুতে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ফাটল ধরেছে, প্লাস্টার খসে পড়েছে। সেতু তৈরি না হওয়ায় দুই জেলার মানুষেরই সমস্যা হচ্ছে। সেতু তৈরির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় স্থানীয় লোকজন যাতায়াতের জন্য একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছিলেন। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাঁকোটি বদলে কাঠের করা হয়। সেই সাঁকো দিয়ে সাইকেল, মোটরবাইক পারাপার করলেও বড় গাড়ি যেতে পারে না। ফলে সময় ও অর্থের অপচয় করে ঘুরপথে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা পিন্টু মণ্ডল, আব্দুর রশিদ জানান, বর্তমান সরকার সেতুর কাজ সমাপ্ত করতে ব্যর্থ।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ভাঙড়ের বাড়জুলি গ্রামে সেতু-লাগোয়া যে ঘরবাড়ি রয়েছে, সেই সব বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিতে হবে। মূলত জমিজটের কারণেই সেতুর সংযোগকারী রাস্তার কাজ আটকে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা চান, জট কাটিয়ে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে দ্রুত সেতুর কাজ শেষ হোক। ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাজাহান মোল্লা বলেন, “ওই সেতুর সংযোগকারী রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে জমিজট বড় সমস্যা তৈরি করেছে। মানুষকে বুঝিয়ে সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা।” কাজ না হওয়ার পিছনে তৃণমূলের মদতকে কোনও প্রভাবশালীর ভূমিকা আছে বলে মানতে চাননি তিনি।
ভাঙড় ১ বিডিও দীপ্যমান মজুমদার বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে আছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। কী ভাবে দ্রুত কাজ শেষ হয়, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”