Arms Recover Case

জীবনতলা অস্ত্র-কাণ্ডে কি যোগ বসিরহাটের ধৃতের, ধন্দে পুলিশ

একটি ইটভাটার পরিত্যক্ত ঘর থেকে তিনটি দোনলা বন্দুক, একটি পাইপগান এবং ২১ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। চট দিয়ে বাঁধা ছিল দোনলা বন্দুকগুলি। বস্তার মধ্যে লুকিয়ে রাখা ছিল কার্তুজ।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ০৯:১৬
Share:
গ্রেফতার হওয়া মনিরুল ইসলাম গাজির সঙ্গে কি যোগ রয়েছে জীবনতলা অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার?

গ্রেফতার হওয়া মনিরুল ইসলাম গাজির সঙ্গে কি যোগ রয়েছে জীবনতলা অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার? —প্রতীকী চিত্র।

অস্ত্র-সহ বসিরহাট জেলা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া মনিরুল ইসলাম গাজির সঙ্গে কি যোগ রয়েছে জীবনতলা অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার? প্রাথমিক তদন্তের পরে এমনটাই অনুমান রাজ্য পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দাদের। তাই ওই অভিযুক্তকে জেলা পুলিশের থেকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছেন গোয়েন্দারা। আগামী সপ্তাহে মনিরুলকে হেফাজতে নিতে আদালতে আবেদন করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।

বুধবার রাতে বসিরহাটে বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা সোলাদানার নলকোড়া থেকে বছর তিরিশের ওই দুষ্কৃতীকে ধরে বসিরহাট জেলা পুলিশ। তাকে জেরা করে সেখানে একটি ইটভাটার পরিত্যক্ত ঘর থেকে তিনটি দোনলা বন্দুক, একটি পাইপগান এবং ২১ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। চট দিয়ে বাঁধা ছিল দোনলা বন্দুকগুলি। বস্তার মধ্যে লুকিয়ে রাখা ছিল কার্তুজ। প্রাথমিক তদন্তের পরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় অস্ত্র কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত ছিল ধৃত মনিরুল।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত মাসে এসটিএফের গোয়েন্দারা জীবনতলা থানার ঈশ্বরীপুর এলাকা থেকে ১৯০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেন। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় দোনলা বন্দুক। সেই ঘটনায় প্রথমে গ্রেফতার করা হয়েছিল চার জনকে। তাদের জেরা করে পরে আরও দু’টি দোনলা বন্দুক এবং কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার হয় আরও তিন জন। বেআইনি অস্ত্র পাচার ও কেনাবেচার অভিযোগে মোট সাত জনকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। যার মধ্যে ছিল কলকাতায় বি বা দী বাগের একটি প্রাচীন অস্ত্রের দোকানের দুই কর্মীও। যারা দোকান থেকে পরীক্ষা করানোর নাম করে ওই কার্তুজ ও বন্দুক সরিয়ে ধৃতদের বিক্রি করত বলে দাবি গোয়েন্দাদের। এর পরেই ওই দোকানে হানা দিয়ে গোয়েন্দারা প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করেন এবং দোকানটি সিল করে দেন। গোয়েন্দাদের দাবি, মূলত বন্দুক কেনা ও কার্তুজ বিক্রি করার সময়ে অনেকেই তা পরীক্ষা করে তবেই কেনেন। আর সেখানেই গরমিল করত ওই দুই কর্মী। পরীক্ষায় যত পরিমাণ কার্তুজ ব্যবহার করা হয়েছে বলে কাগজেকলমে দেখানো হত, তত পরিমাণ ব্যবহার না করে তা সরিয়ে ফেলত অভিযুক্তেরা। পরে এক একটি কার্তুজ ১৫০-২০০ টাকা দরে বিক্রি করে দিত গ্রেফতার হওয়া অস্ত্র কারবারিদের কাছে। যা আবার তারা দুষ্কৃতীদের কাছে বিক্রি করত ৫০০-৫৫০ টাকায়।

সূত্রের খবর, ধৃত আশিক ইকবাল গাজি, হাজি রশিদ মোল্লা, আবুল সেলিম গাজিকে জেরা করার পরেই মনিরুলের নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু পুলিশ তার খোঁজ করছে, তা জানার পর থেকেই সে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল বলে অভিযোগ। বুধবার তাকে নাগালে পায় জেলা পুলিশ। তার পরেই বাংলাদেশ লাগোয়া ওই এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই ছোটখাটো চুরি-ছিনতাই এবং মারধরের মতো অপরাধ ঘটানোর অভিযোগ ছিল।

গোয়েন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, জীবনতলা অস্ত্র-কাণ্ডের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য অস্ত্র পাচার চক্রের যোগ রয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় ওই অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয়েছিল কী উদ্দেশ্যে, তা-ই মূলত জানতে চান এসটিএফের গোয়েন্দারা। তবে বাংলাদেশে সেই অস্ত্র পাচার করা হত কিনা, তা নিয়ে সন্দেহে রয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক অনুমান, ইটভাটা থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র এবং গুলি ধৃতদের থেকে পেয়েছিল মনিরুল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন