স্বজনপোষণের অভিযোগ ত্রাণ নিয়ে

সমুদ্রে ঘেরা জি প্লট পঞ্চায়েতে ২০টি বুথের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। সমুদ্র উপকূলে ওই এলাকার অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর ও কৃষিজীবী।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

পাথরপ্রতিমা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫২
Share:

ছাদ-হারা: বাড়ি ঘর ভেঙেছে বুলবুলে। নিজস্ব চিত্র

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বুলবুল কেটে গেছে প্রায় এক সপ্তাহ। বহু এলাকায় ত্রাণের খাবার এখনও সে ভাবে পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। পাথর প্রতিমার জি প্লট পঞ্চায়েতে যেটুকু পলিথিন এসেছে, সেখানে শাসকদলের স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি, সিপিএম দু’দলই। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল।

Advertisement

সমুদ্রে ঘেরা জি প্লট পঞ্চায়েতে ২০টি বুথের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। সমুদ্র উপকূলে ওই এলাকার অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর ও কৃষিজীবী। এ ছাড়া, যুব সমাজের একাংশ ভিন্নরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। সারা এলাকা জুড়ে হাতেগোনা কিছু পাকা বাড়ি রয়েছে। অধিকাংশই বাড়ি ইটের দেয়াল, টিন-টালির ছাউনি ছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বুলবুলের জেরে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে প্রায় অধিকাংশ এলাকা। সমুদ্র-লাগোয়া গোবর্ধনপুর, ইন্দ্রপুর, সীতারামপুর উত্তর ও দক্ষিণ, সত্যদাসপুর, কৃষ্ণদাসপুর, সুরেন্দ্রগঞ্জ ও বুড়াবুড়িরতট এলাকায় ক্ষতচিহ্ন টাটকা। রাস্তার পাশে টালি, অ্যাসবেসটস ও খড়ের ছাউনির ঘর ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি, ছোট বড় ঝাউ, ইউক্যালিপটাস, বাবলা, গাছ ভেঙে পড়েছে। গ্রামীণ এলাকার পথঘাটে এখনও রাস্তার উপরে গাছ পড়ে রয়েছে। ধান, পানের বরজ, মাছের পুকুরের ক্ষতি হয়েছে।

গোবর্ধনপুর গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণ পাত্র, আরতি বর্মন, অচিন্ত্য দাসদের অভিযোগ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে এত দিন কেটে গেল, পঞ্চায়েত বা প্রশাসনের কেউ আমাদের কাছে আসেনি। আমরা বেঁচে আছি না মরে গিয়েছি, কেউ খোঁজ নেয়নি। ঘরবাড়ি সব ভেঙে পড়েছে। বাড়ির বাচ্চাকাচ্চাদের আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। কোনও ভাবে আমরা রাস্তার উপরে ত্রিপল খাটিয়ে রয়েছি।’’ তাঁরা জানালেন, এখনও পর্যন্ত শুধু বন দফতর থেকে একটা করে ত্রিপল পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপি নেতা, অশোক বেরা, রাজু দাসদের অভিযোগ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে মানুষ যখন দিশেহারা, সে সময়ে শাসক দলের নেতারা তাঁদের পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টে সামান্য ত্রাণের ত্রিপল বিলি নিয়েও স্বজনপোষণ করছেন। একই অভিযোগ করেছেন ওই এলাকার সিপিএম নেতা অশোক মাইতি। তাঁর দাবি, শাসক দল ক্রাণ নিয়ে স্বজনপোষণ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ত্রাণ না দিয়ে যাদের প্রয়োজন নেই, তাদেরও জিনিসপত্র দেওয়া হচ্ছে।

বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাথরপ্রতিমা বিধায়ক সমীর জানা। তিনি বলেন, ‘‘কোনও স্বজনপোষণ হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত যা চাল-ত্রিপল এসেছে, সে সব সমান ভাবে বিলি করা হচ্ছে। বিরোধীরা মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’

রবিবার দুপুরে জি প্লট পঞ্চায়েত এলাকা পরিদর্শনে আসেন জেলাশাসক পি উলগানাথন-সহ অন্যান্যরা আধিকারিকেরা। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে একটি ত্রাণশিবিরে যান তাঁরা। আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement