Crab

কাঁকড়া রফতানি বন্ধ চিনে, বিপাকে সুন্দরবন

সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের একাংশ কাঁকড়া ধরে মোটা দামে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীদের কাছে। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, ঝড়খালি-সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীরা আড়ত খুলে মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে কাঁকড়া সংগ্রহ করেন। সেই কাঁকড়া মাপ অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে রফতানিকারী সংস্থাগুলোর কাছে বিক্রি করেন কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:২৩
Share:

এই কাঁকড়াই সরবরাহ করা হয় চিনে। নিজস্ব চিত্র

করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিপাকে পড়েছে সুন্দরবনের কাঁকড়ার ব্যবসা।

Advertisement

কাঁকড়া ধরা সুন্দরবনের বহু মানুষের পেশা। ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে সেই কাঁকড়া রফতানি হয় বিদেশে। যার বড় অংশের ক্রেতা চিন। বেজিং, সাংহাইয়ের মতো বড় শহরে সুন্দরবনের কাঁকড়ার চাহিদা প্রচুর। তাইল্যান্ড, ব্যাঙ্কক, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর-সহ আশপাশের দেশেও পৌঁছে যায় সুন্দরবনের কাঁকড়া। কিন্তু গত ২৬ জানুয়ারি থেকে সে সব দেশেও কাঁকড়া রফতানি কার্যত বন্ধ। চিন-সহ বেশ কিছু দেশ করোনাভাইরাসের আতঙ্কে আপাতত কাঁকড়া আমদানি বন্ধ রেখেছে। এর ধাক্কায় কাঁকড়ার দামও পড়ে গিয়েছে অনেকখানি। আর সেই কারণেই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কাঁকড়া-ব্যবসায়ীরা।

সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের একাংশ কাঁকড়া ধরে মোটা দামে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীদের কাছে। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, ঝড়খালি-সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীরা আড়ত খুলে মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে কাঁকড়া সংগ্রহ করেন। সেই কাঁকড়া মাপ অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে রফতানিকারী সংস্থাগুলোর কাছে বিক্রি করেন কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা। সেখান থেকেই এই কাঁকড়া রফতানি হয় বিদেশে। ওই ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সুন্দরবনের এই কাঁকড়া সব থেকে বেশি কেনে চিন। চিনের বেজিং, সাংহাইয়ের মত শহরে এই কাঁকড়া রফতানি হয়। এর পাশাপাশি তাইল্যান্ড, ব্যাঙ্কক, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর-সহ আশপাশের অন্য দেশেও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে এই কাঁকড়ার।

Advertisement

কিন্তু ২৬ জানুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে কাঁকড়া রফতানি। ক্যানিংয়ের কাঁকড়া ব্যবসায়ী অজয় নাথ, দুর্লভ মণ্ডলরা বলেন, “এই ভাইরাসের আতঙ্কে এখন কাঁকড়া রফতানি প্রায় বন্ধ। মাঝে মধ্যে অল্প স্বল্প রফতানি হচ্ছে। কিন্তু দাম একেবারে পড়ে গিয়েছে।’’ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, যে কাঁকড়া ১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হত, বর্তমানে সেই কাঁকড়া ৩০০ টাকা কেজিতেও কিনতে চাইছেন না রফতানির সঙ্গে যুক্ত কারবারিরা। শুধুমাত্র স্ত্রী কাঁকড়া সামান্য বিক্রি হচ্ছে।

চিনে কাঁকড়া রফতানিকারী সংস্থা সাহা ট্রেডার্স, চেতনা এন্টারপ্রাইজের মত সংস্থার দাবি, “করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সামুদ্রিক প্রাণী থেকেই হয়েছে বলে মনে করছে চিন-সহ আশপাশের দেশগুলি। আর সেই কারণেই আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে কাঁকড়া আমদানি।’’ শুধু কাঁকড়া নয়, চিংড়ি, অক্টোপাস-সহ অন্য সামুদ্রিক প্রাণীও বর্তমানে চিন-সহ আশপাশের দেশগুলি আমদানি করা বন্ধ করেছে বলে দাবি তাঁদের। শুধুমাত্র ভারতই নয়, বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর কাঁকড়া এই সব দেশে রফতানি করা হয়। মার খেয়েছেন সেখানের ব্যবসায়ীরাও। রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন তিরিশ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে এলাকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement