প্রতীকী ছবি।
হিঙ্গলগঞ্জে একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৫। এত দিন পর্যন্ত সুন্দরবন ঘেঁষা হেমনগর উপকূলবর্তী থানা এলাকায় করোনা সংক্রমণ ছড়ায়নি। হেমনগর থানার যোগেশগঞ্জের বাসিন্দা এক যুবক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ওই যুবকের মা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। বাবার যোগেশগঞ্জ বাজারে দোকান রয়েছে। ১৩ জুলাই ওই পঞ্চায়েত সদস্য এবং তাঁর কলেজ পড়ুয়া ছেলের সামান্য জ্বর ও সর্দি থাকায় হিঙ্গলগঞ্জের সান্ডেলেরবিল হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করাতে আসেন। ১৬ জুলাই রাতে খবর আসে ওই যুবক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই যুবক করোনা পরীক্ষা করানোর পরে ১৬ জুলাই বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই যুবক এবং তাঁর বাবারও গায়ে জ্বর ছিল গত কয়েক দিন ধরে। সেই অবস্থায় দু’জন দোকান চালিয়েছেন। ছেলেও ওই দোকানে বসতেন। তবে রিপোর্ট আসার পরে ওই যুবক-সহ তাঁর পরিবারের সবাইকে বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন করে দেওয়া হয়েছে।
অনির্দিষ্ট কালের জন্য হেমনগর থানা এলাকার সব বড় বাজার, যেমন যোগেশগঞ্জ, কালীতলা, হেমনগর বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ওই যুবক যেহেতু এলাকায় ঘুরেছেন এবং দোকানে বসেছে তাতে যোগেশগঞ্জ এলাকার অনেকেই সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে এখনও ওই যুবকের মায়ের রিপোর্ট আসেনি। মা এবং ছেলে দু’জনের এখন সামান্য উপসর্গ আছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে ওই যুবককে বাড়িতে পৃথক ভাবে রাখা হয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অঙ্কুর কর্মকার জানান, ওই যুবকের প্রাথমিক ভাবে সংস্পর্শে এসেছিলেন ১১ জন। আপাতত তাঁদের আগামী সাত দিন গৃহনিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে। যদি কোনও উপসর্গ দেখা দেয় তবে পরীক্ষা করা হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, সুন্দরবনের এই প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে অনেকের মধ্যেই একটা উদাসীনতা ছিল। অনেকেই মাস্ক বা সামাজিক দূরত্ব মানতেন না। তবে শুক্রবার থেকে এলাকার অন্য ছবি দেখা যাচ্ছে। গোটা এলাকা কার্যত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। স্থানীয়রা নিজেরাই বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন। যাঁরা খুব প্রয়োজনে বাইরে বেরোচ্ছেন তাঁদের মুখে মাস্ক থাকছে। হিঙ্গলগঞ্জ থানার বাঁকড়া, বোলতলা, সান্ডেলবিল-সহ চারটি এলাকায় আরও চার জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল থেকে তাই কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে এই এলাকাগুলি। বাঁকড়া ও বোলতলার যে দুই বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক। একজন আন্দামান আর একজন কেরল থেকে সম্প্রতি ফিরেছেন। এঁদেরও কোনও উপসর্গ নেই। তাই বাড়িতে পৃথক ভাবে রাখা হয়েছে। এই চার জনের প্রাথমিক ভাবে সংস্পর্শে এসেছিলেন ১৭ জন। তাঁদের উপরেও নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।