আতঙ্ক: বোমা পড়ল গ্রামে। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামার লক্ষণ নেই বাসন্তীতে।
মঙ্গলবার বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েত এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে বোমা-গুলির লড়াই বাধে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন একজন। দিনের শেষে গ্রেফতার করা হয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান-সহ ৫ জনকে।
গত শুক্রবারই অটো চালানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতেরই কলতলা মোড়ে। মারধর, বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। প্রচুর বোমা পড়ে।
একের পর এক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনায় অস্বস্তিতে দল। তৃণমূলের সহ-সভাপতি শক্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘দল কড়া নজর রাখছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকেও বলা হয়েছে।’’
কিন্তু নেতাদের এই কথা নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের কানে ঢুকছে কি— এই প্রশ্ন এলাকার বাসিন্দাদের।
মঙ্গলবার জলসার চাঁদা নিয়ে ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতের লেবুখালিতে ফের উত্তেজনা ছড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার লেবুখালিতে উৎসবের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানের চাঁদা দেওয়া নিয়ে আগেই দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল বেধেছিল। তবে বিষয়টি তখনকার মতো মিটেও যায়।
মঙ্গলবার সকালে যুব তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে ব্লক তৃণমূল নেতার অনুগামীদের ফের বচসা শুরু হয়। ব্লক তৃণমূল সভাপতি মন্টু গাজির অনুগামী আবতার মোল্লার নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা বোমা-বন্দুক নিয়ে এলাকায় হামলা চালায় বলে অভিযোগ। যুব তৃণমূল কর্মী আলাউদ্দিন লস্করের বাঁ পায়ে গুলি লাগে। বোমায় ও ধারাল অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম হন আরও দু’জন।
বাসন্তী ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি আমান লস্করের দাবি, ‘‘কোনও কারণ ছাড়াই ওরা আমাদের উপরে হামলা করেছে। এলাকা দখলের জন্য এ সব করছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে মন্টু বলেন, ‘‘আসল ঘটনা এ সব কিছুই না। ওরা গায়ের জোরে এলাকায় তোলাবাজি করছে। সেই নিয়ে একটা গোলমাল হয়েছে। ওদের মারে আমাদেরও দু’জন জখম হয়েছেন।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকার দখল নিয়ে গোলমাল লেগেই লাগে। নানা অজুহাতে মারপিট বেধে যায়।
বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘লেবুখালির ঘটনায় কেউ কোনও অভিযোগ করেনি। তবে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পঞ্চায়েত প্রধান আবতার মোল্লা-সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’