প্রতিবাদ: বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকেরা। নিজস্ব চিত্র
মিড ডে মিলের খাবারে বিলি হচ্ছে মেয়াদ উত্তীর্ণ সয়াবিন, পচা ডিম— এমনই অভিযোগে সরব হলেন অভিভাবকেরা।
সাগর ব্লকের খাসরামকরচক মহামায়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে গত দু’দিন ধরে এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে দিদিমণিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। তাঁদের অভিযোগ, চাল-ডালের মানও খুব খারাপ।
৬০ জন পড়ুয়া আছে এই কেন্দ্রে। অভিভাবকদের অভিযোগ, দিনের পর দিন নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে। কর্মীরা ইচ্ছে করেই খারাপ খাবার দেন বলে অভিযোগ। অভিভাবকদের একাংশের দাবি, ২০১৯ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ সয়াবিন দেওয়া হচ্ছে বাচ্চাদের। বার বার মায়েরা অভিযোগ করলেও সুরাহা হয়নি। বাচ্চা কম এলেও ডিম সিদ্ধ করে পাশের বাড়ির ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। পর দিন ওই ডিম ফ্রিজ থেকে বের করে গরম জলে ফুটিয়ে বাচ্চাদের দেওয়া হয় বলে জানালেন অভিভাবকেরা। যাঁর বাড়ির ফ্রিজে ডিম রাখা হয়, তিনিও এ কথা স্বীকার করেছেন।
শুক্রবার কেন্দ্রের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সাগরের বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অভিভাবকেরা। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ওই কর্মী ঈপ্সিতা মাইতি দাস বেশ কিছু অভিযোগ স্বীকারও করে নেন। বিক্ষোভের মুখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্লক প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে।
অভিভাবক রাজলক্ষ্মী দাস বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে পোকা ধরা সয়াবিন খাওয়ানো হচ্ছে। মায়েরা সয়াবিন তেতো লাগছে কেন জানতে চাইলে দিদিমণি জানান, হলুদ বেশি পড়েছে। আমি একদিন এসে দেখি, ২০টি ডিম সেদ্ধ করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পরে সেখান থেকে ১০টা ডিম দেখলাম একজনের বাড়ির ফ্রিজে রাখার জন্য দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ অন্য এক অভিভাবক খালেমা বিবি জানালেন, অনেক দিন ধরেই চলছে অব্যবস্থা। কিছু বলতে গেলে দিদিমণি দুর্ব্যবহার করেন বলেও তাঁর অভিযোগ। সিদ্ধ ডিম ঝর্ণা গিরি নামে এক মহিলার বাড়িতে রাখা হয়েছিল। তিনিও জানান, ১০টি সিদ্ধ ডিম তাঁর বাড়ির ফ্রিজে রাখা ছিল। পরদিন সকালে সেগুলি বাচ্চাদের গরম করে দেওয়া হয়।
ঈপ্সিতা বলেন, ‘‘মেয়াদ উত্তীর্ণ সয়াবিনের প্যাকেট রাখাটা ঠিক হয়নি। আমার ভুল হয়েছে। আমি মায়েদের কাছে ক্ষমা স্বীকার চেয়েছি। কেন্দ্রের পাশে একটি বাড়িতে বাসি ডিম ফ্রিজে রেখে পরের দিন বাচ্চাদের গরম করে দিয়েছিলাম। এটাও অন্যায় হয়েছে।’’
সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে সিডিপিওকে জানানো হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা আগামী দিনে যাতে না ঘটে, সে জন্য সুপারভাইজারদের প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শন করতে বলা হয়েছে।’’ সাগরের সিডিপিও অশোক দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। তারপরে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’