মূর্তি গড়ছেন এক শিল্পী। —নিজস্ব চিত্র।
দিনরাত এক করে কাজ চলছে পালপাড়ায়। করোনার পরে এ বছর সব থেকে বেশি চাহিদা বেড়েছে মাটির প্রতিমা ও পুজোর সরঞ্জামের। লকডাউন পর্বে অন্যান্য বহু
ব্যবসার মতো ক্ষতি হয়েছিলমৃৎশিল্পে। এ বার সমস্যা মিটেছে বলে জানাচ্ছেন শিল্পীরা।
বারাসত থেকে যশোহর রোড ধরে মিনিট পঁচিশ গেলেই দত্তপুকুরের চালতাবেড়িয়া। চোখে পড়বে, রাস্তার দু’পাশে মৃৎশিল্পীদের কারখানা। চায়ের ভাঁড় থেকে শুরু করে মাটির নানা জিনিস সারা বছর তৈরি করেন তাঁরা। পুজোর মরসুমে মাটির প্রতিমা ও প্রদীপ গড়ার ব্যস্ততা থাকে। পোড়া মাটির ঘর সাজানোর নানা সরঞ্জাম এখান থেকে পাড়ি দেয় দেশে-বিদেশেও।
শিল্পীদের দাবি, দুর্গাপুজোর আগে গণেশ ও বিশ্বকর্মা পুজো। সেই মূর্তি গড়ার কাজও চলছে পুরোদমে। বেশিরভাগ পুজোই দুর্গাপ্রতিমাই এখন মহালয়ায় উদ্বোধন হয়ে যায়। তাই হাতে সময় খুব কম। পুজোর জন্য মাটির নানা সরঞ্জামও তৈরি হচ্ছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততা তুঙ্গে।
শিল্পীদের দাবি, সরকার ক্লাব ও পুজো কমিটিগুলিকে টাকা দিচ্ছে। এ বছর টাকা বাড়িয়েছে। তবে তার লাভ এসে পৌঁছয় না শিল্পীদের কাছে। সরকার কিছু সাহায্য করলে ভাল হত বলে মনে করেন তাঁরা। তবে বরাত ভাল এলে অনেকটা পুষিয়ে যায়। আগের থেকে মাটি, বাঁশ, খড় এবং মজুরি বেড়েছে। তবে সে ভাবে প্রতিমার দাম বাড়েনি বলে আক্ষেপ শিল্পীদের।
শিল্পী বিপ্লবকুমার পাল বলেন, ‘‘গত তিন বছরের তুলনায় এ বার চাহিদা দ্বিগুণ। সুযোগ বুঝে শ্রমিকেরা মজুরি বাড়িয়েছেন। মাটি-সহ অন্যান্য সব জিনিসের দাম প্রায় কুড়ি শতাংশ বেড়েছে।’’ আর এক শিল্পী সুভাষ পাল বলেন, ‘‘একটি কারখানায় দুর্গা, গণেশ তৈরি হচ্ছে। অন্যটিতে টেরাকোটার ঘণ্টা, প্রদীপ ও ফুলদানি তৈরি হচ্ছে। দু’ক্ষেত্রেই বরাত ভাল আসছে। নতুন করে বরাত নিতে পারছি না।’’
কারখানা মালিক লক্ষ্মণ পাল বলেন, ‘‘শ্রমিকদের এক হাজার টাকা ও শিল্পীদের তিন হাজার টাকা প্রতিমা পিছু দিতে হচ্ছে। ভিন্ রাজ্যে ও বিদেশে গণেশ, লক্ষ্মী এবং ছোট দুর্গা বিক্রি করতে পারছি বলেই লাভের আশা করছি। তবে সরকার আমাদের আর্থিক সহযোগিতা
করলে ভাল হত।’’