Subodh Singh

ব্যারাকপুরে সক্রিয় সুবোধের ঘনিষ্ঠ ২০ দুষ্কৃতী

ব্যারাকপুরে বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লকে খুন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক কালে ব্যবসায়ীকে গুলি ও হুমকি ফোন— সবেতেই সুবোধের দলবল জড়িত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪ ০৬:১২
Share:

সুবোধ সিংহ। —ফাইল ছবি।

বিহারের দুষ্কৃতী সুবোধ সিংহকে জেরা করে এ রাজ্যে তার ঘনিষ্ঠ ২০ জন দুষ্কৃতীর সন্ধান পেল সিআইডি। তারা মূলত ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল ও আশপাশের এলাকায় সক্রিয় বলে জানা গিয়েছে। সিআইডি সূত্রের খবর, ওই দুষ্কৃতীদের মধ্যে শার্প-শুটার থেকে তোলাবাজিতে সিদ্ধহস্ত, এমন অনেকে রয়েছে। গোয়েন্দাদের একাধিক দল ওই দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বলে সূত্রের খবর। এক গোয়েন্দা-কর্তা জানান, সুবোধ নিয়মিত জেল থেকে তাদের সঙ্গে কথা বলত। কোথায় অপরাধ ঘটানো সম্ভব, তার খোঁজ নিত সে। তবে, সমস্ত অপরাধের বরাত সুবোধ নিজেই জেলে বসে নিত। তার পরে তা শাগরেদদের কাছে পৌঁছে দিত নির্দেশ-সহ।

Advertisement

ব্যারাকপুরে বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লকে খুন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক কালে ব্যবসায়ীকে গুলি ও হুমকি ফোন— সবেতেই সুবোধের দলবল জড়িত। সিআইডি-র একাংশ জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের হেফাজতে থাকা সুবোধ গোয়েন্দাদের জেরার মুখে ব্যারাকপুর সিটি পুলিশ এলাকার ওই ঘটনার সঙ্গেই ডোমজুড়, আসানসোল, রানিগঞ্জের ডাকাতির ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়েছে। এক তদন্তকারী জানান, তবে কার নির্দেশে সে মণীশ শুক্লকে খুন করেছিল, সে বিষয়ে মুখ খোলেনি সুবোধ। এ দিকে, টিটাগড়ের ব্যবসায়ীকে হুমকি এবং বেলঘরিয়ায় ব্যবসায়ীকে গুলি করার ঘটনার তদন্তে এ দিন সিআইডি-র স্পেশ্যাল সুপার দেবর্ষি দত্তের নেতৃত্বে একটি দল টিটাগড় থানায় যায়।

গোয়েন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, ব্যারাকপুরের ওই দুষ্কৃতীদের এবং এ রাজ্যের সঙ্গে সুবোধের যোগাযোগ ২০০৭ সাল থেকে। বিহার থেকে এসে সুবোধ ওই দুষ্কৃতীদের সাহায্যে উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। প্রায় দেড় বছর সেখানে ছিল সুবোধ। সিআইডি-র জেরার মুখে সুবোধের দাবি, প্রথম দশ মাস কিছু না করলেও তার পর থেকে, অর্থাৎ ২০০৮-এর শুরু থেকে বাগুইআটি, মধ্যমগ্রাম, খড়দহ এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় সরকারি ব্যাঙ্কে ডাকাতি করেছিল সে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘটনাস্থলে ছিল সুবোধ। ওই সময়ে রাজ্য পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সে। জেল খাটার পরে সুবোধ বিহারে ফিরে যায়। সেখান থেকে ২০১১ সাল নাগাদ ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে বেশ কয়েকটি ডাকাতি করে সুবোধের নেতৃত্বাধীন দুষ্কৃতীরা। সেখানেও গ্রেফতারির পরে চার বছর জেলে ছিল সে। ২০১৭ সালে ফের এ রাজ্যে আসে সুবোধ। তদন্তকারীরা জানান, ওই সময়ে এ রাজ্যে এসে হাওড়ার বালিতে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল সুবোধ। তাকে ওই বাড়ি ভাড়া করে দিয়েছিল শশাঙ্ক নামে এক দুষ্কৃতী। সে বর্তমানে পটনার জেলে বন্দি। বালিতে থাকার সময়েই আসানসোলের হীরাপুরে একটি স্বর্ণ ঋণ প্রদানকারী সংস্থায় ডাকাতি করে সুবোধ। ওই মামলায় সুবোধ রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে তিন মাস জেলে ছিল। পরে ছাড়া পেয়ে বিহারে চলে যায় সে। ২০১৮ সালে বিহারে ডাকাতির ঘটনায় ধরা পড়লে সুবোধের স্থান হয় পটনার বেউর জেলে।

Advertisement

রাজ্য পুলিশ জানতে পেরেছে, দেহরাদূনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সুবোধ এমবিএ পাশ করেছিল। ১৯৯৯ সালে সেখান থেকে বিহারে ফেরার পথে অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সে। যা থেকে আর সে বেরোতে পারেনি বলেই সুবোধ দাবি করেছে তদন্তকারীদের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement