ভেঙে পড়েছেন বেচারামের (ইনসেটে) পরিজনেরা। ছবি: সুজিত দুয়ারি
রাস্তার পাশে আবর্জনা-ভর্তি ডোবার মধ্যে থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে, অশোকনগর থানা এলাকায়, নৈহাটি সড়ক-সংলগ্ন এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের নাম বেচারাম মণ্ডল (৩২)। বাড়ি হরিণঘাটা থানার মালিয়াডাঙা গ্রামে। তিনি ২৪ নভেম্বর বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের সদস্যেরা থানায় ডায়েরি করেছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেচারামের পরিবারের পক্ষ থেকে অশোকনগর থানায় এক দম্পতির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেচারাম পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাঁর দুই ছেলেমেয়ে। অভিযোগ, বেচারামের সঙ্গে এক মহিলার বিবাহবর্হিভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সম্প্রতি বিষয়টি জানতে পারেন মহিলার স্বামী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ নভেম্বর কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে গাড়ি করে বেচারামের বাড়িতে গিয়েছিলেন মহিলার স্বামী। বেচারামকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তাঁর বাড়িতে এসে দেখা করতে বলেন।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বেচারাম বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন। তাঁর শ্যালিকা জয়ন্তী মণ্ডল বলেন, ‘‘বাড়িতে বলে বেরিয়েছিলেন, তাঁর যদি কোনও ক্ষতি হয়, সে জন্য দায়ী থাকবেন ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী।’’ ওই দম্পতিই বেচারামকে খুন করেছেন বলে অভিযোগ পরিবারের। মৃতের আত্মীদের দাবি, দেহ দেখে তাঁদের অনুমান, অ্যাসিড দিয়ে মুখ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
বেচারামের শ্যালিকা জানান, জামাইবাবুর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা তাঁরা জানতেন না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার স্বামী বেচারামকে খুনের কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় বেচারাম তাঁদের বাড়ির সামনে এসে মদের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে খেয়ে ফেলেন। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বের হচ্ছিল। অজ্ঞান হয়ে যান। ওই ব্যক্তি বেচারামকে নিজের ভ্যানে করে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে মনে হয়েছিল, বেচারাম মারা গিয়েছেন। তখন ঘাবড়ে গিয়ে দেহ রাস্তার পাশের ডোবায় ফেলে দেন। পুলিশ এই বক্তব্য খতিয়ে দেখছে।