মোবাইল হাতেই বাইকে হাত। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
রোমিওরা সাবধান। দামি মোবাইল সেট নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে মোটরবাইক বা গাড়ি চালাতে চালাতে কথা বললেই খপাত! বাজেয়াপ্ত হতে পারে সাধের মোবাইল সেটটি। প্রয়োজনে গ্রেফতার হতে পারেন চালক।
এমন সর্তকতা জারি করা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। কোনও অবস্থাতেই রাস্তায় বাইক, গাড়ি চালানোর সময়ে মোবাইলে কথা বলা যাবে না। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচির প্রথম দিকে হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো রুখতে নজর দেওয়া হয়েছিল। এ বার গাড়ি চালানোর সময়ে মোবাইলে কেউ যাতে কথা না বলে, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। মদ্যপ অবস্থাতেও গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। গাড়ি চালাতে চালাতে মোবাইলে কথা বলার দৃশ্য আকছার দেখা যায় পথেঘাটে। হেলমেটের নীচে মোবাইল ঢুকিয়ে কথা বলতে বলতে স্বচ্ছন্দে বাইক চালায় অনেকেই। ব্লু টুথেও কথা বলতে দেখা যায় গাড়ি চালানোর সময়ে। এই ঘটনা দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ায়।
সম্প্রতি হাবরায় যশোর রোড ধরে ম্যাটাডোর চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। পুলিশ কর্মীদের নজরে পড়ে, চালকের কানে মোবাইল। ম্যাটাডোরটি আটক করা হয়। চালকের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হয় মোবাইল সেটটি। গ্রেফতারও করা হয় ওই চালককে। হাবরা থানার পুলিশ যশোর রোড থেকে আরও কয়েকজন বাইক আরোহী যুবককে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে, যারা মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাইক চালাচ্ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে এক যুবক নিজের প্রেমিকাকে বাইকের পিছনে বসিয়ে মোবাইল কথা বলতে বলতে ড্রাইভিং করছিল। তার কাছ থেকে যে মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তার দাম প্রায় ২০ হাজার টাকা। পুলিশ সেটটি বাজেয়াপ্ত করার পরে যুবকটি কান্নায় ভেঙে পড়ে। বহু অনুনয়-বিনয় করে বলে, ওই মোবাইলে তার প্রচুর ছবি আছে। কিন্তু টলানো যায়নি কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের। জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হলে তা জমা দেওয়া হয় আদালতে। সেখান থেকেই বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে ফেরত পাওয়া যেতে পারে মোবাইল।
হাবরা ছাড়াও বনগাঁ মহকুমাতেও পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই মহকুমা থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যাঁরা গাড়ি চালাতে চালাতে চালাতে কথা বলছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট মামলাও রুজু করা হয়েছে।’’
তবে শুধু মাত্র পুলিশের নজরদারিতে পরিস্থিতি বদলাবে না, তা বিলক্ষণ জানেন পুলিশ কর্তারাও। এ জন্য সাধারণ মানুষকে বার বার সচেতন হতে বলছেন তাঁরা। বলছেন, মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালালে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। সাইকেল চালকদের ক্ষেত্রেও চালাতে চালাতে মোবাইলে কথা বলার ঘটনা চোখে পড়ে। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে ‘মোটর ভেহিক্যাল অ্যাক্ট’-এ মামলা করার সুযোগ নেই। পুলিশ সুপার জানান, সাইকেল চালকদের বোঝানোর ব্যবস্থা করা হবে।