পুলিশ ও আইনজীবীদের বচসা। বসিরহাটে
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ফের মনোনয়ন-অশান্তির আঁচ বসিরহাট আদালতে।
শুক্রবার ওই আদালতের পাশেই দু’দলের সংঘর্ষ থামতে গিয়ে মার খেয়েছিলেন এক মুহুরি। নিগৃহীত হন এক আইনজীবী। শনিবারও একই জায়গায় গোলমালে জড়িয়েছিল দু’দল। গোলমালে জড়িতদের একজন এক আইনজীবীর ঘরে ঢুকে পড়েন। তার জেরে আক্রান্ত হলেন কয়েকজন আইনজীবী ও মুহুরি। ভাঙচুর চালানো হল সেরেস্তায়। ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন ওই আদালতের আইনজীবীরা শুধু কর্মবিরতিই করলেন না, মহকুমাশাসকের দফতর ঘেরাও এবং অবরোধও করেন। অবরোধ চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা। পুলিশের সক্রিয়তার অভাবেই এই গোলমাল বলে তাঁদের অভিযোগ। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলেন তাঁরা।
এ দিন দুপুরের পরে আদালতে আর কাজ হয়নি। গোলমালের জেরে আধ ঘণ্টা মনোনয়ন জমাও বন্ধ থাকে। আইনজীবীরা এক সময়ে মিছিল করে মহকুমাশাসকের দফতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। তাতে অশান্তি আরও বাড়ে।
ওই আদালতের ফৌজদারি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘এই গণ্ডগোল কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশের সক্রিয়তার অভাবে দুষ্কৃতীরা পেয়ে বসেছে।’’ পুলিশ অভিযোগ মানেনি। পুলিশ জানিয়েছে, কোন দু’টি দল গোলমাল করেছে তা স্পষ্ট নয়। গোলমালে জড়িত অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম রহমত আলি গাজি, জাকির আলি গাজি, হোসেন আলি গাজি এবং আক্তারুল গাজি। সকলেই গাছা গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে পুরোদমে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া চলছিল বসিরহাট মহকুমাশাসকের দফতরে। কিছুটা দূরে বসিরহাট আদালতের পাশে এক প্রার্থীর কাগজপত্র কেড়ে নেওয়াকে ঘিরে বাঁশ-লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় দু’পক্ষ। প্রাণ বাঁচাতে একজন আদালতে আইনজীবীদের সেরেস্তায় ঢুকে পড়ে। তার পরেই আইনজীবী ও মুহুরিদের মারধর এবং সেরেস্তায় ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতের আইনজীবীরা কর্মবিরতির ডাক দেন।
বসিরহাট দেওয়ানি আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক অমিত মজুমদার বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা আমার ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। আদালতের কাজে আসা চন্দন বিশ্বাস নামে একজনকে মারধর করে। ঠেকাতে গেলে সেরেস্তার প্রবীর বিশ্বাসের হাতে বাঁশের বাড়ি মারে।’’
পরপর দু’দিন কেন আইনজীবী-মুহুরিদের আক্রান্ত হতে হবে, এ প্রশ্নও ওঠে। আইনজীবীরা ইটিন্ডা রোড অবরোধ করায় ঘটনাস্থলে যান মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি এবং পুলিশকর্তারা।