আদর: বাবা-মায়ের সঙ্গে বর্ণ। ছবি: সুজিত দুয়ারি
রাজ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জন করল হাবড়ার সালতিয়া ফুলতলা নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র বর্ণ দাস। রাজ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্ষদের উদ্যোগে জলপাইগুড়িতে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় হাই জাম্প বিভাগে ১.৩৭ মিটার উচ্চতা অতিক্রম করে প্রথম স্থান অর্জন করেছে বছর দশেকের এই বালক।
দুঃস্থ পরিবারের এই প্রতিভাময় খেলোয়াড় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে খেলাধুলো করতে চায়। কিন্তু পরিবারের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তার প্রশিক্ষণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্ণকে যাবতীয় সাহায্য করা হবে। মছলন্দপুর ২ পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণপদ মণ্ডল বলেন, “বর্ণ আমাদের গর্ব। ওর এগিয়ে যাওয়ার পথে আমরা সব রকম সহযোগিতা করব। পরিবারটি যাতে সরকারি প্রকল্পে পাকা বাড়ি পায় তারও চেষ্টা করব।”
বর্ণর বাবা বিষ্ণুপদ বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ করেন। মা চন্দনা সেলাইয়ের কাজ করে স্বামীকে সাহায্য করেন। বর্ণর দাদা কলেজে পড়েন। দম্পতির সামান্য আয়ে দুই ছেলের পড়াশোনা ও সংসার খরচ চলে। তার পরে যা পড়ে থাকে, তাতে বর্ণর প্রশিক্ষণের খরচ ওঠে না।
বর্ণর বাবা মনে করেন, সরকারি বা বেসরকারি সাহায্য পেলে ছেলে তার লক্ষ্যে বিনা বাধায় এগিয়ে যেতে পারবে। দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। তিনি বলেন, “ছেলের সাফল্যে আমি খুশি। ওর এখন উন্নত মানের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তো শুনেছি সহযোগিতা করে। তাদের কাছে পাশে দাঁড়ানোর আবেদন করছি।” বর্ণ বলে, “আমার স্বপ্ন, অলিম্পিকে প্রতিনিধিত্ব করে দেশের জন্য সোনার মেডেল জিতে ঘরে ফেরা।” বর্ণের এই সাফল্যে খুশি তার স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সহপাঠীরা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রদীপকুমার বালা বলেন, “বর্ণের জন্য আমরা গর্বিত। সরকারের কাছে আবেদন, ও যাতে জাতীয় পর্যায়ে খেলা চালিয়ে যেতে পারে, সে জন্য সাহায্য করতে। আমরাও সাধ্যমতো সহযোগিতা করব।”
সকলেই চান, বর্ণের ঠিকঠাক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হোক। না হলে দারিদ্রের কাছে অচিরেই হারিয়ে যাবে ছেলেটির প্রতিভা।