ভাঙচুর করা হয় এই মোটর বাইকটি। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল নেতার বাড়িতে গুলি ছুড়ে হামলা চালানোর অভিযোগে এক দুষ্কৃতীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিল জনতা। হামলাকারীর মোটর বাইকটিও ভাঙচুর করা হয়। ধৃত আরশাদ গাজির কাছ থেকে একটি রিভলবার এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার সঙ্গীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
মিনাখাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেত্রী অনিতা রায় বলেন, “সম্প্রতি সিপিএম থেকে তৃণমূলে আসা দলের এক গোষ্ঠীর লোকজন ষড়যন্ত্র করে দলের নেতা আইজুল গাজিকে খুনের জন্য এসেছিল।” যদিও ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করে আরশাদের দাদা রাছেড় আলি মণ্ডল বলেন, “দুষ্কৃতীরা হয় তো ভাইকে কোনও অসত্ উদ্দেশে তৃণমূল নেতার বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। ওরা গুলি ছুড়েছিল বলেও শুনেছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিনাখাঁর চাপালি পঞ্চায়েতের চাপালি গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি আইজুল। বুধবার রাত ১২টা নাগাদ দু’টি মোটর বাইকে চার জন দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়। সে সময়ে আইজুল বাড়িতে ছিলেন না। দুষ্কৃতীরা এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। আশপাশের লোকজন শব্দ শুনে বেরিয়ে পড়েন। আইজুলের ভাইরাও চলে আসেন। তাঁদের তাড়া খেয়ে তিন দুষ্কৃতী পালাতে পারলেও জনতার হতে ধরা পড়ে যায় স্থানীয় জলসেরিয়া গ্রামের বাসিন্দা আরশাদ। শুরু হয় গণধোলাই। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জনতাকে কোনও মতে শান্ত করে আরশাদকে উদ্ধার করে। মিনাখাঁ হাসপাতাল থেকে তাকে পরে পাঠানো হয় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গেলে দেখা গেল, আইজুলের বাড়ির সামনে পড়ে রয়েছে ভাঙা মোটর বাইক। রাতে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলি বাড়ির দরজা-জানালা-সহ নানা জায়গায় লেগেছে। সে সব দেখাতে দেখাতে পরিবারের সদস্য রওশন গাজি জানান, এলাকায় একটি সালিশি সভায় যাওয়ার কথা ছিল ভাইয়ের। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওঁকে খুনের ছক কষে রাস্তায় অপেক্ষা করছিল। বিশেষ সূত্রে আইজুল সে কথা জানতে পেরে সভায় না গিয়ে বসিরহাটে চলে যান। সভায় না যাওয়ায় আইজুল বাড়িতে আছে মনে করে আরশাদ-সহ চার জন এসে হামলা চালায়। তারা ৫ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন রওশন। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষে জানানো হয়, এলাকায় একই দলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে এমন বিবাদ নতুন নয়।
যদিও আরশাদ গাজির দাবি, আদৌ কোনও হামলার ঘটনা ঘটেনি। মেছোভেড়িতে যাওয়ার সময়ে আইজুলের লোকজন বিনা কারণে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।