প্রতীকী ছবি
আমপানে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে শাসক দলের পঞ্চায়েত সদস্য ও নেতা-কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে পোস্টার পড়ল এলাকায়।
রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের দেওয়ালে সাঁটানো পোস্টার ঘিরে এলাকা সরগরম হয়ে উঠেছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, যাঁদের ঘর ভেঙে পড়েছে, নদীর বাঁধের উপরে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছেন, তাঁরা ক্ষতিপুরণের টাকা না পেলেও শাসকদলের নেতা-কর্মীরা টাকা পাচ্ছেন। এর তদন্ত দাবি করেছেন ওই গ্রামবাসীরা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমপানের ঝড়ে নদী-জঙ্গলে ঘেরা নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে প্রায় ৭ হাজার পরিবার সম্পুর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামের পর গ্রাম মাটির বাড়ি ভেঙে তছনছ অবস্থা। মাসখানেক কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত অনেকেই টাকার অভাবে ঘর বাঁধতে পারেননি। শিশুদের নিয়ে কোনও ভাবে উঁচু জায়গায়, খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ওই পঞ্চায়েতে ৮৯০ জন ক্ষতিপুরণের টাকা পেয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ, এলাকায় অনেক গরিব মানুষ ত্রিপলটুকুও সরকারি সাহায্য হিসাবে পাননি। অথচ এলাকার শাসক দলের নেতা-কর্মী, পঞ্চায়েত সদস্য, তাঁর পরিবারের একাধিক লোক ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার করে পেয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ।
দমকল গ্রামের বাসিন্দা সিপিএম নেতা ইয়াসিন গাজির অভিয়োগ, যাঁরা প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত, এমন অনেককে সাহায্য করা হয়নি। বেছে বেছে তৃণমুলের নেতা-কর্মী, পঞ্চায়েত সদস্যেরা ওই টাকা তুলছেন। এমনকী, শাসক দলের নেতার পাকাবাড়ি আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও এমন কয়েকজনের নামে টাকা ঢুকেছে। তাঁর আরও অভিযোগ, যে ৮৯০ জনের টাকা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা অধিকাংশই শাসক দলের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে জড়িয়ে।
রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের তৃণমুল নেতা তথা জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বাপুলি বলেন, ‘‘কোনও স্বজনপোষণ হয়নি। প্রশাসনকে স্বচ্ছ ভাবে তালিকা তৈরি এবং বণ্টন করার জন্য বলা হয়েছে। সম্পুর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ এ বিষয়ে মথুরাপুর ২ বিডিও রিজওয়ান আহমেদ বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েতে একই পরিবারের দু’জন ক্ষতিপুরণের টাকা পেয়েছেন বলে খবর পাওয়ার পরে তাঁদের নোটিস করা হয়েছে। টাকাও ফেরত নেব। ইতিমধ্যে দু’জনের কাছে থেকে টাকা ফেরত নেওয়া হয়েছে। তবে ওঁরা পঞ্চায়েত সদস্য কিনা বলতে পারব না।’’ তিনি জানান, আমপানের ক্ষতিপুরণের তালিকায় কোনও ত্রুটি থাকলে তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কারও কোনও সমস্যা থাকে, তা হলে বিডিও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করতে বলেছেন। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।