—প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূল পরিচালিত কুলপির চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরেই সেখানকার পঞ্চায়েত সচিবকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। ঘটনায় অস্বস্তিতে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব। আতঙ্কে পঞ্চায়েতে যাওয়া ছেড়েছেন সচিব ভিক্টর মিশ্র।
বিডিও সৌরভ গুপ্ত জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যেমন নির্দেশ আসবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পঞ্চায়েত সচিবের সুরক্ষা নিশ্চিত করারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুপ্রিয় হালদার বলেন, ‘‘এমন ঘটনা আর যাতে না ঘটে, তার দায়িত্ব আমরা নেব। দলের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত পঞ্চায়েতে যেতে বারণ করা হয়েছে উপপ্রধানকে।’’
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে। ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত অফিসের করিডর দিয়ে হেঁটে আসছেন পঞ্চায়েত সচিব ভিক্টর মিশ্র। আচমকা সামনের একটি ঘর থেকে বেরিয়ে এসে তাঁর গলা টিপে ধরে ধাক্কা দেন তৃণমূলের উপপ্রধান সাবির মোল্লা। তারপর থাপ্পড় মারেন। ভিডিয়োয় ধরা পড়েছে, কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য সচিবকে বাঁচাতে গেলেও বাধা মানতে চাননি সাবির। সেই সঙ্গে তৃণমূলেরই কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যও সচিবের হয়ে রুখে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের ওপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি চলে কিছুক্ষণ।
কিন্তু কেন এমন ঘটনা?
পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, ৯ জুলাই পঞ্চায়েতের সাধারণ সভা হয়েছিল। সভায় প্রস্তাবনার (রেজ়োলিউশন) কিছু অংশ নিয়ে পঞ্চায়েত সচিবের সঙ্গে বিরোধ বাধে উপপ্রধানের। তার জেরেই এই হামলা বলে অভিযোগ।
ভিক্টর মালদহের ইংরেজবাজারের বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রধানের ঘরে ঢোকার সময় উপপ্রধান আমাকে মারধর করেন ও খুনের হুমকি দেন। নিরাপত্তার জন্য বিডিওকে জানিয়েছি।’’ ঢোলাহাট থানায় একই অভিযোগ করলেও পরে অবশ্য তা প্রত্যাহার করে নেন ভিক্টর। পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশের দাবি, ভয় দেখানোর ফলেই অভিযোগ তুলে নিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত উপপ্রধান সাবিরের সঙ্গে ফোন ও এসএমএসের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলেও কোনও উত্তর মেলেনি। তবে, প্রধান প্ৰধান শবনম বেগম মানছেন, নিন্দনীয় ঘটনা। তাঁর পঞ্চায়েতে উপস্থিতিতেই ওই ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘‘একজন সরকারি আধিকারিকের গায়ে হাত তোলা উপপ্রধানের উচিত হয়নি। থানায় অভিযোগ হয়নি। উপপ্রধান সচিবের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এমন যাতে আর না হয়, সে দিকে আমরা খেয়াল রাখব। আমরাও প্রতিবাদ জানিয়েছি।’’
আক্রান্ত সচিবের পাশে দাঁড়িয়েছে শাসদ দলের কর্মচারীদের সংগঠনও। কুলপি ব্লক তৃণমূল কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অসিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঘটনারনিন্দা করছি। উপপ্রধানের আইনানুগ শাস্তি হোক। আমরা স্মারকলিপি দেব।’’
ঘটনায় তৃণমূলকে বিঁধেছে বিজেপি। দলের মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক বিপ্লব নায়েক বলেন, ‘‘নিন্দনীয় ঘটনা। শাসক দলের মদতপুষ্ট হয়ে কাজ না করলে মার খেতে হবে। এটা তো নতুন নয়। আর পুলিশের ক্ষমতা নেই,শাসক দলের নেতাকে গ্রেফতার করার। এদের জন্য কেউ নিরাপদ নয়। না সাধারণ মানুষ, না সরকারি কর্মী।’’