সোনারপুরের সমবায় ব্যাঙ্কে দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ গ্রাহকদের। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের পর এ বার দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে সমবায় সমিতিতে দুর্নীতির অভিযোগ। শনিবার সোনারপুরের লাঙলবেড়িয়া অঞ্চল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডে অন্তত ১০ কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ বিক্ষোভ শুরু করলেন গ্রামবাসীরা। কামালগাজি-বারুইপুর বাইপাস অবরোধ করে বিক্ষোভরতদের অভিযোগ, ‘‘কয়েক হাজার গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা লুট হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁদের এ-ও অভিযোগ, এ নিয়ে একাধিক বার অভিযোগ জানানো হলেও প্রশাসনের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
গ্রাহকদের অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরে ব্যাঙ্কের মোট ৬,৩১৯ জন গ্রাহক তাঁদের জমানো টাকা পাচ্ছেন না। ঋণ দেওয়ার নামে গ্রাহকদের অর্থ নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা জানাচ্ছেন, লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকাও পাচ্ছেন না। গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম বিষয়টি তাঁদের নজরে আসে। এ নিয়ে বিডিও অফিস থেকে শুরু করে মহকুমাশাসকের কাছে দরবার করেও কোনও সুরাহা হয়নি। তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘অডিট’ করার নামে প্রহসন চলছে এখানে। সমবায়ের যিনি স্পেশাল অফিসার ছিলেন, সেই সৌগত চক্রবর্তীকে বদলি করা হয়েছে। তিনিই এই ‘ষড়যন্ত্রের মূলচক্রী’ বলে অভিযোগ করছেন বিক্ষোভকারীরা। প্রথমে গ্রাহকরা সমবায় অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পরে বারুইপুর কামালগাজি বাইপাস রোড অবরোধ করেন। এই ‘দুর্নীতির তদন্তে’ তাঁরা সিবিআই এবং ইডি তদন্তের দাবি করেছেন। এমনই এক গ্রাহকের কথায়, ‘‘এটা একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র।’’
উল্লেখ্য, আলিপুরদুয়ারের মহিলা ঋণদান সমবায় সমিতিতে ৫০ কোটির বেশি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যার প্রেক্ষিতে সিআইডিকে তদন্ত বন্ধ করতে বলে সিবিআই এবং ইডি-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। বস্তুত, আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে সিবিআই এবং ইডি-র হস্তক্ষেপ চেয়ে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলা হয়েছিল।
শনিবার লাঙলবেড়িয়ায় এই বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বারুইপুর এবং সোনারপুর থানার পুলিশ। পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠে যায়। তবে ওই ঘটনায় ১৫ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গ্রাহকেরা।