—ফাইল চিত্র।
অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ডেঙ্গি ও অজানা জ্বরের মোকাবিলায় কাজ শুরু করল। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলা ও পঞ্চায়েত স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ শেষ। চলছে গ্রামীণ স্তরের প্রশিক্ষণ। গত বছর ডেঙ্গি ও অজানা জ্বর প্রায় মহামারির চেহারা নিয়েছিল ওই জেলায়। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর দেরিতে নড়ে বসায় তা ছড়িয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এ বার তাই ভুল করতে চাইছে না প্রশাসন।
শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্য দফতরের পাশাপাশি পুরসভা এবং পুরনিগম এই কাজ করবে। অন্য দিকে, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে জেলা প্রশাসন এই কাজ করবে বলে জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। সম্প্রতি জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণের কাজ প্রায় শেষ। অজানা জ্বর ও ডেঙ্গিকে গুরুত্ব দিয়ে বাড়ি বাড়ি যোগসূত্র তৈরি হচ্ছে। প্রশিক্ষিত কর্মীরা এলাকার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবেন। রক্তপরীক্ষার যন্ত্রের মতো চিকিৎসা অনুষঙ্গ এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির পরিষেবা বাড়ানো হচ্ছে। এলাকা পরিষ্কার করার দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।’’
গত বছর ডেঙ্গি আর অজানা জ্বরে নাস্তানাবুদ হয়েছিল দমদম, কামারহাটি, বিধাননগরের পাশাপাশি দেগঙ্গা, বসিরহাট, হাবরার মতো গ্রামীণ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। মারাও যান অনেকে। তাই গ্রীস্ম, বর্ষায় মশা এবং পতঙ্গের দাপট শুরু হওয়ার আগেই তৎপরতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। সেই মতো চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রথমে জেলাস্তর পরে পঞ্চায়েত স্তরে প্রশিক্ষণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন ১৯০০টি এলাকার গ্রামীণ স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ চলছে। ১৫ মার্চের মধ্যে সে কাজ শেষ হবে। ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী ও আশাকর্মীরা প্রতি ব্লকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা ও সচেতনতার কাজ শুরু করেছেন। গত বছর পরিবারের কত জনের জ্বর হয়েছিল, কোথায় চিকিৎসা করা হয়েছিল, কী কী সমস্যা হয়েছিল, এরকম ১০টি প্রশ্ন জানতে চাওয়া হচ্ছে। বাড়ির কোথাও মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে কি না তা-ও দেখা হচ্ছে। রাস্তাঘাট, নিকাশির পরিষ্কারেও নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। জ্বর হলেই প্রশাসনকে জানাতে ফোন নম্বরও দেওয়া হচ্ছে।
দেগঙ্গার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে মশা মারার কামান, ব্লিচিংয়ের সরবরাহ করা শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে এলাইজা পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রের ব্যবস্থা, বেসরকারি সংস্থাগুলিতে কোন যন্ত্রে ও কী নিয়মে রক্তপরীক্ষা হচ্ছে সে ব্যপারেও নজরদারি চলছে। বারাসত-সহ জেলার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের পতঙ্গবাহিত রোগের বিষয়ে সচেতনতার প্রচারও করছে জেলা প্রশাসন।