লাইসেন্স ছাড়াই বিকোচ্ছে অ্যাসিড

সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, অ্যাসিড বিক্রেতাকে সরকারি অনুমোদন পত্র রাখতে হবে। কে অ্যাসিড কিনছে, তার সচিত্র পরিচয়পত্র, ফোন নম্বর রাখতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মগরাহাট শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৯
Share:

সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, অ্যাসিড বিক্রেতাকে সরকারি অনুমোদন পত্র রাখতে হবে। কে অ্যাসিড কিনছে, তার সচিত্র পরিচয়পত্র, ফোন নম্বর রাখতে হবে।

Advertisement

কিন্তু এ সবের তোয়াক্কা করা হয় না বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট। সেখানে মুদির দোকান কিংবা হার্ডওয়্যারের দোকানেও দেদার অ্যাসিড বিক্রি হচ্ছে। কোনও ক্ষেত্রেই বিক্রেতার লাইসেন্স বা ক্রেতার পরিচয়পত্র রাখার
বালাই নেই।

মগরাহাট ২ ব্লকের মধ্যে ধামুয়া উত্তর, ধামুয়া দক্ষিণ, হোটর মর্যাদা— এই তিন পঞ্চায়েত এলাকায় বাসিন্দাদের মূলত সোনা, রুপোর অলঙ্কার তৈরি করাই প্রধান জীবিকা। প্রায় দু’হাজার কারখানাও রয়েছে। রুপোর কাজে প্রয়োজন হয় নাইট্রিক ও সালফিউরিক অ্যাসিড। ওই অ্যাসি়ডই মানুষের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। মগরাহাট ২ বিডিও অর্নিবাণ বসু বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

এ দিকে, দিনের পর দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অ্যাসিড হামলা বেড়ে যাচ্ছে। কিশোরী, তরুণী, মহিলা কেউই ছাড় পাচ্ছেন না। মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবেই সুপ্রিম কোর্ট অ্যাসিড বিক্রির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অ্যাসিড আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়েছে। সরকারি ভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু এ ভাবে খোলা বাজারে অ্যাসিড বিক্রি হলে এই হামলা কতটা কমবে, তা নিয়ে সংশয়ে অনেকেই।

দিন কয়েক আগেও উস্তির কেয়াকণা গ্রামের এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও তার প্রতিবেশী তরুণীর উপরে অ্যাসিড হামলার ঘটনা ঘটে। প্রেমিকের ছোড়া অ্যাসিডে পুড়ে গিয়েছে তাঁদের দু’জনের মুখ। মূল অভিযুক্ত হাফিজুল লস্কর কোথা থেকে অ্যাসিড পেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ধামুয়ায় কিশোরেরই এক আত্মীয়ের বাড়ির থেকে অ্যাসিড আনা হয়েছিল।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অ্যাসিডের দোকানে বা কারখানায় মজুত রাখতে হলে সরকারি অনুমতি পত্র ছাড়াও লাগে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির শংসাপত্র, সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই বলেই এ ভাবে অ্যাসিড বিক্রি সম্ভব হচ্ছে। এক ‌রুপো কারখানার মালিকের দাবি, তাঁর দোকানে অ্যাসিড ব্যবহার করা হয় না। অন্য কারখানায় হয় কিনা, তা জানা নেই।

ধামুয়া উত্তর পঞ্চায়েতের প্রধান বিমল মণ্ডল বলেন, ‘‘রুপো কারখানা চালানোর জন্য পঞ্চায়েত থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তবে অ্যাসিড ব্যবহার করার জন্য সরকারি শংসাপত্র মালিকেরা ন‌িয়েছেন কিনা, বলতে পারব না।’’

পুলিশ জানিয়েছে, খোলা বাজারে অ্যাসিড বিক্রি নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ মেলেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement