এই সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় শিশুর দেহ। — নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবেশীর সঙ্গে সীমানা নিয়ে বিবাদের জেরে তাঁর বছর ছয়েকের পুত্রকে সেপটিক ট্যাঙ্কে ঠেলে ফেলে দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানার বাবুরচক এলাকায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই অভিযোগকে সামনে রেখে তৃণমূলকে বিঁধেছে বিজেপি এবং সিপিএম। তবে তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য, আইন আইনের পথে চলবে।
বাবুরচকের বাসিন্দা সাগর মণ্ডলের অভিযোগ, গত ৫ জানুয়ারি তাঁর পুত্র রাজেশকে নবনির্মিত সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দিয়ে খুন করেন তাঁর প্রতিবেশী তথা তৃণমূল নেতা প্রহ্লাদ মণ্ডল। প্রহ্লাদের স্ত্রী জয়ন্তী স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। সাগরের দাবি, ৫ জানুয়ারি তাঁর পুত্রকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ নিয়ে খবর দেওয়া হয় কুলতলি থানায়। পুলিশ এসে অবশেষে প্রহ্লাদের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে শিশুর দেহ উদ্ধার করে। ওই কাণ্ডের বেশ কয়েক দিন পর থানায় প্রহ্লাদ এবং তাঁর স্ত্রীর নামে অভিযোগ দায়ের করেন সাগর। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘ওরা প্রথমে আমাকে থানায় অভিযোগ করতে দেয়নি। এলাকার তৃণমূল নেতারা আমাকে দিয়ে সাদা কাগজে লিখিয়ে নেয়।’’
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপন-উতোর। একযোগে তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে বিজেপি এবং সিপিএম। বিজেপির জয়নগর সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য উত্তম হালদারের কথায়, ‘‘আইনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। এই ঘটনার সত্য উদ্ঘাটিত হওয়া উচিত। দোষীর যেন শাস্তি হয়।’’ সিপিএমের কুলতুলি এরিয়া কমিটির সম্পাদক উদয় মণ্ডল আবার প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক গণেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি শুনেছি, তেঁতুল পাড়তে গিয়ে কুয়োয় পড়ে শিশুটি মারা গিয়েছে। এখন এটা নানা ভাবে খুঁচিয়ে তোলা হচ্ছে। যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। আমরা পুলিশকে বলেছি, উপযুক্ত তদন্ত করতে। দোষ প্রমাণিত হলে শাস্তি হবে।’’ অভিযুক্ত প্রহ্লাদও সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জানিয়েছেন, আইন আইনের পথে চলবে।
বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে ‘ঘটনার পর কেউ দায়ী নয়’ বলে থানায় লিখিত ভাবে জানানো হয়। অবশ্যই এ নিয়ে প্রহ্লাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পুলিশ। পরে শিশুটির পরিবারের তরফে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতীশ। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারুইপুরের এসডিপিও।