পাঁচিলে লাগানো এই তারেই দেওয়া ছিল বিদ্যুৎ সংযোগ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
সাজানো ফলের বাগান ফুট পাঁচেক উঁচু পাঁচিলে ঘেরা। পাশেই একফালি জায়গায় মঙ্গলবার বিকেলে বল খেলছিল পাড়ার কচিকাঁচারা। বল সেই বাগানে গিয়ে পড়তেই তা কুড়িয়ে আনার জন্য পাঁচিল টপকানোর চেষ্টা করেছিল বছর ষোলোর তন্ময় রায়। পাঁচিলের গায়ে লোহার জালে আড়াল করে রাখা বিদ্যুতের তারে তার হাত ছুঁয়ে যায়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচিলেই ঝুলতে থাকা কিশোরকে তার সঙ্গীরা বাঁশ দিয়ে খুঁচিয়ে কোনও রকমে বিদ্যুৎবাহী তার থেকে বিচ্ছিন্ন করে।
বনগাঁরর পল্লিশ্রী এলাকায় এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়েরা। তাঁরা জানান, কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালের আইসিউতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছে তন্ময়কে। আর বাগানের মালিক অর্জুন রায় সস্ত্রীক পলাতক। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে অর্জুনের বিরুদ্ধে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ও তার ব্যবহার নিয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, অর্জুনের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা তন্ময়ের মামার বাড়ি বনগাঁর ২১ নম্বর ওয়ার্ডে। দু’মাস ধরে সে মামার বাড়িতেই থাকে। স্থানীয় কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠ স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। পল্লিশ্রী এলাকায় বাড়ি মিষ্টি ও ফল ব্যবসায়ী অর্জুনের। বাড়ি লাগোয়া বাগানে আম, পেয়ারা-সহ নানা ফলের গাছ আছে। আম ও পেয়ারার মরসুম আসার আগেই পাঁচিল দিয়ে বাগান ঘিরে তার উপরে লোহার জাল লাগিয়েছিলেন তিনি। তার আড়ালে যে বিদ্যুৎবাহী তার ছিল তা পাড়ার কেউই জানতেন না।
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুরজিৎ দাস বলেন, ‘‘ফলের বাগানের পাঁচিলে বিদ্যুৎ সংযোগ করা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ। অর্জুনের শাস্তি চাই। ছেলেরা খেলাধুলো করে। বল তো যাবেই। তা বলে প্রাণহানি হতে পারে এমন কাজ করবে?’’ অর্জুনের তালাবন্ধ বাড়ির সামনে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয়েরা। বাসিন্দারা বলেন, ‘‘পাঁচিলে তার টেনে বিদ্যুৎ সংযোগ করে রাখার কথা আমরা কেউ জানতে পারিনি।’’
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বনগাঁর ডিভিশনাল ম্যানেজার ইমন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে অবক হলাম। সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে হুকিং করে পাঁচিলে বিদ্যুৎ সংযোগ করা হয়েছিল। আমরা ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছি।’’