মানবিকতা: বাড়ি ফেরার পথে (বাঁ দিকে) জাকিরের সঙ্গে তোফাজ্জেল। নিজস্ব চিত্র
কীর্তন শুনতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হঠাৎ স্মৃতি হারিয়েছিলেন যুবক। দু’দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর শনিবার দেগঙ্গার এক যুবকের চেষ্টায় বাড়ি ফিরলেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম জাকির মণ্ডল। বাড়ি বনগাঁর পাইকপাড়ায়। বৃহস্পতিবার সকালে দেগঙ্গার লেবুতলা রেলস্টেশন সংলগ্ন একটি বাড়িতে হঠাৎই ঢুকে পড়েন জাকির।
বছর তিরিশের ওই যুবককে দেখে এলাকার কেউ কেউ মনে করেছিলেন ছেলেধরা। অনেকে জঙ্গিও ভেবে বসেছিলেন। গ্রামবাসীরা তেড়ে মারতেও যান। সেই সময় ওই পথ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এলাকারই যুবক তোফাজ্জেল খান। গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে জাকিরকে উদ্ধার করে তিনি নিয়ে আসেন নিজের বাড়িতে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা বজরুল রহমান ও জাকিরকে নিয়ে পুলিশের কাছে যান তোফাজ্জেল। দীর্ঘক্ষণ ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর জাকিরের ঠিকানা জানতে পারে পুলিশ। বনগাঁর পরিচিত লোকজনকে ঘটনাটি জানান তোফাজ্জেল। শেষে খোঁজ পাওয়া যায় জাকিরের বাড়ির। জাকিরকে নিয়ে বনগাঁয় তাঁর বাবার কাছে পৌঁছে দেন তিনি।
জাকিরের বাবা মফিজুল মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাচ্ছি বলে বেরিয়ে আর ফেরেনি ছেলে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পাওয়ায় ভরসা হারিয়ে ফেলেছিলাম। এ ভাবে যে ওকে ফিরে পাব ভাবতে পারেনি। তোফাজ্জেলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’ ছোট থেকে জাকির একটু আধটু অস্বাভাবিক আচরণ করতেন বটে। কিন্তু এ ভাবে স্মৃতি হারিয়ে ফেলার ঘটনা এই প্রথম বলে তাঁর বাবা জানান।
কী ভাবে জাকির পৌঁছল দেগঙ্গায়?
জাকির বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। তারপর আর কিছু মনে নেই। বনগাঁ থেকে ট্রেনে উঠে কী ভাবে দেগঙ্গায় পৌঁছলাম তা জানি না।’’ প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন ওই যুবক।
তোফাজ্জেল বলেন, ‘‘ছেলেধরা বলে যে ভাবে গুজব ছড়িয়েছিল, তাতে ছেলেটি মারাও যেতে পারত। ওকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পেরে ভাল লাগছে।’’