চলছে জেটিঘাট পরিদর্শন। ছবি: দিলীপ নস্কর।
বেহাল জেটিঘাট। জলে নেমে ট্রলারে ওঠানামা করতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। বৃহস্পতিবার সকালে রায়দিঘির ওই ঘাট পরিদর্শনে গেলেন স্থানীয় বিধায়ক ও সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকেরা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সমুদ্রে মাছ ধরার মরসুম দিন কুড়ি আগে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ঘাট থেকে ট্রলার গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে রওনা দিয়েছে। রায়দিঘির মণি নদী সংযোগস্থলে ৫ নম্বর জেটিঘাট ও ভগবতী ২ জেটিঘাট থেকে বহু বছর ধরে ট্রলার মাঝ সমুদ্রে পাড়ি দেয়। মাছ ধরে ফেরেও ওই ঘাটে। কিন্তু ভগবতী জেটি ঘাট ছোট। চার-পাঁচটি ট্রলার সেখানে দাঁড়াতে পারে। আবার ৫ নম্বর জেটিঘাটের পাড়কে সংযোগকারী রাস্তা তৈরি হয়নি। ফলে জোয়ারের সময়ে ওই ঘাটে ওঠা-নামার পথে প্রায় বুকসমান জল জমে যায়। তাতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। কারণ, ট্রলার গভীর সমুদ্রে যাওয়ার আগে বরফ, জল, জাল, তেল-সহ নানা সামগ্রী ট্রলারে তুলতে হয়। আবার সমুদ্র থেকে ফেরার পরে ট্রলার থেকে মাছ নামাতে হয় ঘাটে। কিন্তু দু’টি ঘাটের বেহাল পরিকাঠামোর জন্য শ্রমিকেরা ওঠানামা করতে পারছেন না। মাছ ভর্তি ঝুড়ি নিয়ে বুকসমান জল ঢেলে পাড়ে উঠতে গিয়ে বেসামাল অবস্থা হচ্ছে। ভাঙছে হাত-পা। জলে পড়ে নষ্ট হচ্ছে মাছ। একই অবস্থা বরফ, তেল, জল, তোলার সময়েও। অথচ, মাছ ধরার মরসুমে ওই দু’টি ঘাট থেকে প্রায় দেড়শো ট্রলার ছাড়ে।
মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, ৫ নম্বর ঘাটের অ্যাপ্রোচ রোড এবং ভগবতী ২ জেটিঘাট দু’টি সংস্কারের জন্য একাধিক বার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকেরা দেখেও গিয়েছেন। কিন্তু বছরের পর বছর একই রকম বেহাল পরিকাঠামো রয়ে গিয়েছে। কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। রায়দিঘি ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অলোক হালদার বলেন, ‘‘বহু বছর ধরে এই দু’টি জেটিঘাট দিয়ে ট্রলার সমুদ্রে যাতায়াত করে। কিন্তু সংস্কার হয় না। শ্রমিকেরা ট্রলারে ওঠানামা করতে পারছেন না। নিত্যদিন ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। এখন যা পরিস্থিতি, অস্থায়ী ভাবে বাঁশ দিয়ে ৫ নম্বর জেটিঘাটের অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি করতে হবে। ট্রলার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। ব্লক প্রশাসনকে একাধিক বার বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অবিলম্বে জেটিঘাট দু’টি সংস্কারের উদ্যোগ করলে আমরা খুবই উপকৃত হব।’’
এ বিষয়ে রায়দিঘির বিধায়ক অলোক জলদাতা সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, "ওই দু’টি জেটি ঘাট সংস্কারের জন্য সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদকে বলা হয়েছিল। অনুমোদন হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।"