রওনা: কর্মীরা চললেন কলকাতার দিকে। বুধবার বাসন্তীতে তোলা। নিজস্ব চিত্র।
২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস পালন উপলক্ষে আজ, বৃহস্পতিবার দুই জেলায় গণপরিবহণ কার্যত থমকে যেতে চলেছে। কর্মী-সমর্থকদের ধর্মতলায় সমাবেশে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন রুটের অধিকাংশ বাসই তুলে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, বহু ছোট গাড়িতে করেও কর্মী-সমর্থকেরা ধর্মতলা যাবেন। অনেক জায়গা থেকে অটো-টোটো চালক সংগঠনের সদস্যেরাও সমাবেশে যাবেন। ফলে রাস্তায় বেরিয়ে অটো-টোটোও কম মিলতে পারে। নিত্যযাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়বেন বলে আশঙ্কা। বুধবারই অনেক জায়গা থেকে বাস তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
প্রশাসন ও তৃণমূল সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় থানা এলাকা থেকে প্রায় ৮০টি বাস এবং ৪২০টি লরি, ম্যাটাডর, ছোট হাতি, ম্যাজিক-সহ বিভিন্ন গাড়ি ধর্মতলা যাবে। কাশীপুর থানা এলাকা থেকে প্রায় ৬০টি বাস এবং ২১০টি বিভিন্ন ধরনের গাড়ি যাবে। জীবনতলা থানা এলাকা থেকে প্রায় ৪০টি বাস এবং ২১০টি গাড়ি যাবে। ক্যানিং, কুলতলি, ডায়মন্ড হারবার-সহ জেলার অন্যান্য এলাকাতেও ছবিটা প্রায় একই। বুধবারই জেলা থেকে বহু কর্মী-সমর্থক ট্রেনে বা অন্য পথে কলকাতার দিকে রওনা দিয়েছেন।
ঘটকপুকুর বাস মালিক সংগঠনের এক সদস্য বলেন, “বাসন্তী হাইওয়েতে বৃহস্পতিবার কার্যত কোনও বাস পাওয়া যাবে না। ইতিমধ্যে ২১৩, ডিএন-১৬, দেউলি-বাবুরহাট-সহ বিভিন্ন রুট থেকে অধিকাংশ বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রুটে বাস চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।”
জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি শক্তি মণ্ডল বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে মিছিলে আসার জন্য কয়েকটি করে বাস নেওয়া হয়েছে। তবে এ দিন সমাবেশের জেরে শহরের অধিকাংশ রাজপথ অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে। অধিকাংশ গাড়ির কলকাতায় ঢোকার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে যাবে। সে কারণে অনেক বাস মালিক রুটে বাস নামাতে চাইছেন না। তবে যাত্রীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য বাস মালিকদের গাড়ি বের করার অনুরোধ করা হয়েছে।”
উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমা থেকে বাস ও ছোট-বড় গাড়ি মিলিয়ে প্রায় ৬৫০ গাড়ি ধর্মতলায় যাবে। হাসনাবাদ, সন্দেশখালি ১, ২, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁ ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত বাস রুট রয়েছে, সেগুলিতে কোনও বাসই কার্যত থাকবে না। সন্দেশখালি, মালঞ্চ, হাসনাবাদ, বসিরহাট থেকে যে সব বাস বাসন্তী হাইওয়ে ধরে যাতায়াত করে, সেগুলি সবই কার্যত তুলে নেওয়া হচ্ছে।
আইএনটিটিইউসির বসিরহাট জেলার সহ-সভাপতি বাবুলাল সাধুখাঁ অবশ্য বলেন, “রাস্তায় পর্যাপ্ত পরিমাণে টোটো এবং অটো চলবে। ফলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে না।”
বনগাঁ মহকুমা থেকে দু’শোর বেশি বাস ও ১৫০০ ছোট গাড়ি করে কর্মী-সমর্থকেরা যাবেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। দু’শো বাস তুলে নেওয়া হলে কার্যত রুটগুলিতে বাস থাকবে না। স্থানীয় সূত্রের খবর, টোটো-অটো চালকদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ধর্মতলা যাওয়ার। ফলে রাস্তায় অটো-টোটোর সংখ্যাও কম থাকার আশঙ্কা।
কর্মসূত্রে যাঁরা বনগাঁ মহকুমার বাইরে যান, তাঁরা অনেকেই বুধবার বাড়ি ফিরছেন না। অনেকে আবার পরিকল্পনা করেছেন, তৃণমূলের বাসে করেই কর্মস্থলে চলে যাবেন।
বনগাঁর তৃণমূল সভাপতি গোপাল শেঠ বলেন, “রুটগুলি থেকে সব বাস তোলা হচ্ছে না। কয়েকটি বাসরাখা হচ্ছে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য।”
এ বারই প্রথম মতুয়ারা সাংগঠনিক ভাবে ধর্মতলা যাচ্ছেন। বুধবার রাতে তাঁরা ট্রেন ধরবেন। বনগাঁ স্টেশন-সংলগ্ন মাঠে তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।