উপরে, ধৃত যুবক। (ইনসেটে) জখম মহিলা। —নিজস্ব চিত্র
ধারাল অস্ত্র নিয়ে শিক্ষিকার বাড়িতে হামলা চালাল এক যুবক। অস্ত্রের কোপে ওই শিক্ষিকার দু’টি হাত মারাত্মক জখম হয়েছে। দু’টি আঙুল কেটে ঝুলে পড়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হাবড়া থানার রাউতারা বিশ্বাসপাড়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, জখম শিক্ষিকার নাম নাজমুন নাহার। তাঁকে বালিগঞ্জের একটি নার্সিংহোম ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার অভিযোগে পুলিশ শনিবার রাতেই এলাকার এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম খুরশিদ আলম মণ্ডল। রবিবার বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কেন এই হামলা, তা নিয়ে অবশ্য অন্ধকারে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর বেয়াল্লিশের নাজমুন মহেন্দ্রনাথ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা। বাপের বাড়ি থাকেন। শনিবার রাত সাড়ে ১০টা খাওয়া শেষে নাজমুন বৌদি ও মায়ের সঙ্গে বসে গল্প করছিলেন। আচমকা তরোয়াল নিয়ে চড়াও হয় এক যুবক।
পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, হামলাকারীর শরীর কালো পোশাকে ঢাকা ছিল। মুখে কালো রঙের মুখোশ পরা ছিল। পরিবারের লোকজন প্রথমে মনে করেছিলেন, নাজমুনের ছেলে কালো পোশাক পরে তরোয়াল নিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। হামলাকারী নাজমুনকে আক্রমণ করে। তিনি দু’হাত দিয়ে তরোয়াল ধরে ফেলেন। হাত কেটে রক্ত ঝরতে থাকে। ধস্তাধস্তি হয়। তরোয়াল কেড়ে হামলাকারী নাজমুনের বৌদির গলায় ধরে। ইতিমধ্যে লোকজন চলে আসে। পালানোর সময়ে নাজমুনের হাতে কোপ মারে হামলাকারী। দু’টি আঙুল কেটে ঝুলতে থাকে।
নাজমুনের দাদা আসরাফুল আলম বলেন, ‘‘রাতে হঠাৎ ঘুম ভাঙে যায়। কালো পোশাক পরে তরোয়াল নিয়ে একজনকে ঘরে দেখে ভেবেছিলাম, আমার ভাগ্নে বুঝি ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু ভুল ভাঙে। হঠাৎই কালো পোশাকের ওই মূর্তি বলে ওঠে, চুপ করো, কোনও কথা হবে না।’’ নাজমুনের মা তসলিমা বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই। হামলাকারী এসে টাকাপয়সাও চায়নি। বুঝতে পারছি না কেন এমন ঘটল।’’
পরিবারের লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় নাজমুনকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বালিগঞ্জের নার্সিংহোমে। রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ আসে। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, এলাকায় জনবসতি কম। চারিদিকে ঝোপজঙ্গল। বাড়ির পাঁচিল টপকে দুষ্কৃতী ঢুকেছিল।
পুলিশ তদন্তে নেমে খুরশিদের নাম জানতে পারে। পরিবার পক্ষ থেকেও তার নামে অভিযোগ দায়ের করাহয় থানায়। এলাকায় ‘মারকুটে’ বলে পরিচিত ওই যুবক। কেন সে এই পরিবারের উপরে হামলা চালাল, খতিয়ে দেখছেন তদন্তককারীরা।