ফাইল চিত্র।
এ খেলা শুধু খেলা নয়। খেলা, খেলাকে ঘিরে গোটা কর্মযজ্ঞ— সবই হতে হবে দূষণমুক্ত পরিবেশে।
সেই জন্য রোজ দু’বেলা জল দিয়ে ধুতে হবে রাস্তা। বন্ধ রাখতে হবে সমস্ত নির্মাণকাজ। বালি-সিমেন্ট-পাথরকুচি-সহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী রাস্তার ধারে রাখা যাবে না। রাশ টানতে হবে যান চলাচলে। যত্রতত্র গাড়ি পার্ক করা নয়। খোলা জায়গায় কিছু জ্বালানো নিষেধ।
অনূর্ধ্ব ১৭ যুব বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালীন শহরের বাতাস দূষণমুক্ত রাখতে কলকাতা ও বিধাননগর পুরসভা এবং পুলিশকে এমনই নানা ব্যবস্থা নিতে বলেছে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশিকা অনুযায়ী। গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য-সচিব সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই মর্মে চিঠি দিয়েছেন।
‘শহর’ বলতে মূলত যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন ও বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকা, যশোর রোড, ভিআইপি রোড, পরমা আইল্যান্ড পর্যন্ত ইএম বাইপাস ও তার দু’ধারকে ধরা হচ্ছে। রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ওই বিস্তীর্ণ এলাকাকে ‘গ্রিন জোন’ তকমা দিয়েছে যুব বিশ্বকাপ উপলক্ষে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর দফতরের নির্দেশিকায় ওই কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, এই সময়ে বিশেষ উদ্যোগে রাস্তার ধার থেকে আবর্জনা নিয়মিত সাফ করতে হবে।
যুবভারতীতে প্রথম খেলা ৮ অক্টোবর। ২৮ অক্টোবরের ফাইনালও সেখানে। বহু বিদেশি খেলোয়াড়, দর্শক, প্রতিনিধিদের সমাগম হবে কলকাতায়। তাই শহর সাজানোর পাশাপাশি বাতাসকেও নির্মল রাখতে হবে ফিফা-র নিয়ম মেনে।
কোনও শহরের বাতাসের গুণমান কী রকম, তা ১২টি মানদণ্ডে নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে। পর্ষদ সূত্রের খবর, ১২টি মানদণ্ডের মধ্যে কলকাতা ও তার আশপাশে তিনটির অবনতি হয় অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে মার্চ পর্যন্ত। ওই তিনটি হলো— পিএম ২.৫, পিএম ১০ (বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ও সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা) এবং নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড।
এক বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এখানে বৃষ্টি কমে আসে, আবহাওয়া শুকনো হয়, বাতাস শান্ত হয়। ফলে, ধূলিকণাও বাড়তে থাকে।’’ আর এই সময়েই, ফাইনাল ছাড়াও ১৬ ও ২২ তারিখে খেলা রয়েছে সল্টলেকে। পর্ষদ চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘শহরের বাতাসের মান ঠিক রাখতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, সেটা পুলিশ ও পুরসভাকে জানিয়েছি। বাতাসে দূষণ যাতে না বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’
কিন্তু পুলিশই এখনও বহু পুরনো গাড়ি ব্যবহার করে। সে সব গাড়ি এবং বহু ট্যাক্সি থেকেও কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, এই ধরনের গাড়ি যাতে টুর্নামেন্ট চলাকালীন ‘গ্রিন জোন’-এ ঢুকতে না পারে, সে দিকে নজর রাখা হবে। কোনও ডিজেল গাড়িকেও এই ক’দিন গ্রিন জোন-এ ঢুকতে দিতে বারণ করেছে পর্ষদ। তবে পুলিশের একাধিক সূত্রে বলা হয়েছে, এটা বাস্তবে কার্যকর করা অসম্ভব।