সরকারি অফিসে যান, মাইনেও পান, বেকার হতে চলেছেন এমন ১৭,৫০০ অবৈধ কর্মী!

গত দু’মাস ধরে তল্লাশি চালিয়ে রাজ্য সরকারের ৫০টি দফতরে ৩ লাখ ১৩ হাজার কর্মচারীর মধ্যে এমন ১৭ হাজার ৪২৭ জনের খোঁজ মিলেছে। 

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

তাঁরা অফিসে আসেন। কাজ করেন। মাসের শেষে মাইনেও পান। কিন্তু যে পদে কাজ করেন, তার অনুমোদনই নেই সরকারি খাতায়! গত দু’মাস ধরে তল্লাশি চালিয়ে রাজ্য সরকারের ৫০টি দফতরে ৩ লাখ ১৩ হাজার কর্মচারীর মধ্যে এমন ১৭ হাজার ৪২৭ জনের খোঁজ মিলেছে।

Advertisement

এই কর্মীদের ভবিষ্যৎ ঘিরে সংশয় এবং উদ্বেগ তৈরি হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। কারণ, গত ২৮ অগস্ট অর্থসচিব এইচ কে দ্বিবেদী এক নির্দেশিকায় জানিয়েছিলেন, বিনা অনুমোদনের কর্মীদের সেপ্টেম্বর মাস থেকে আর বেতন দেওয়া হবে না।

অর্থ দফতরের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এইচআরএমএস)-এর তথ্য বলছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার জন নিজেদের ‘বৈধ’ সরকারি কর্মী হিসাবে প্রমাণ করতে পারেননি। ১০ তারিখ সিস্টেম বন্ধ হওয়ার আগে আরও কয়েকশো কর্মী পদের বৈধতার প্রমাণ দাখিল করে থাকতে পারেন বলে দফতরের একটি সূত্রের ধারণা।

Advertisement

এই ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যারকেই দায়ী করেছেন কর্মীদের একাংশ। তাঁদের মতে, ‘‘অর্থ দফতর অযথা হুড়োহুড়ি করায় এত জন কর্মীর নাম বাদ পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ যেন সরকারি দফতরে ‘এনআরসি’ ব্যবস্থা কায়েম করার শামিল।’’ যদিও অর্থ দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘সরকার যখন বেতন দিচ্ছে, তখন সঠিক লোককে তা দেওয়া হচ্ছে কি না, সেটা যাচাই করার অধিকার তার রয়েছে।’’

অর্থ দফতরের খবর, এখন এইচএমআরএস সফটওয়্যারের মাধ্যমেই বেতন থেকে ছুটি, সার্ভিস বই থেকে পদোন্নতি— সব কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। সেই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর গত জুলাইয়ে অর্থ দফতর প্রত্যেক কর্মীর নিয়োগের বৈধতা যাচাইয়ে নেমেছিল। বলা হয়, এইচএমআরএসের মাধ্যমে যাঁরা বেতন পান, তাঁরা কোন দফতরে, কোথায়, কী পদে কাজ করেন, তা ‘ট্যাগ’ করা হবে। পাশাপাশি দফতরের নির্দিষ্ট সংখ্যক অনুমোদিত পদে কারা কাজ করেন তা-ও চিহ্নিত করতে হবে। প্রথম দফায় অনেক দফতরই অনুমোদিত পদের সাপেক্ষে কর্মীদের বাছতে ব্যর্থ হয়। ১০ সেপ্টেম্বর সময়সীমা শেষের পরেও দেখা যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, কারা, ভূমি ও ভূমি সংস্কার, পঞ্চায়েত, স্কুলশিক্ষা দফতরের বহু কর্মীর নিয়োগ ‘অনুমোদিত’ পদে হয়নি। অর্থ কর্তারা জানাচ্ছেন, নিয়োগ বৈধ পথে হলেও তা যদি সরকার অনুমোদিত ‘নির্দিষ্ট পদে’ না হয়, তা যথার্থ নয়।

ফলে যে সব কর্মীর এখনও এইচএমআরএস-এ ট্যাগিং হয়নি, তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অর্থ কর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। পাশাপাশি শুধু ৫০টি দফতরেই সাড়ে ১৭ হাজার বিনা অনুমোদনের কর্মী মিলেছে, স্কুল, কলেজ, পঞ্চায়েত, পুরসভায় যে কত হাজার এমন কর্মী মিলবে তা ভেবে দিশেহারা অর্থ কর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement