হিন্দি বলয়ে দল কেন দাঁত ফোটাতে পারল না, তা নিয়ে সিপিএমে চর্চা দীর্ঘ দিনের। কলকাতায় দলের সদ্যসমাপ্ত সাংগঠনিক প্লেনামেও সেই প্রশ্ন উঠেছিল। সাম্প্রতিক অতীতে উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যকে সংগঠনের দিক থেকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেও সেখানে ব্যর্থতার কথা সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এ বার ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ হতে চলেছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠনে!
শেষ পর্যন্ত কোনও অঘটন না ঘটলে আসন্ন সর্বভারতীয় সম্মেলন থেকে এসএফআইয়ের নতুন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেতে পারেন হিন্দিভাষী একটি রাজ্যের দলিত ছাত্র-নেতা। হিমাচল প্রদেশের বিক্রম সিংহ এসএফআইয়ের বিদায়ী কমিটিতে যুগ্ম সম্পাদকের পদে আছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ-ধারী এই ছাত্র-নেতাকেই পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হিসাবে পছন্দ সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। বিক্রমই দায়িত্ব পেলে পশ্চিমবঙ্গ বা দক্ষিণ ভারতের বাইরে থেকে এই প্রথম এসএফআইয়ের কাণ্ডারী উঠে আসবেন।
রাজস্থানের শিকারে আগামী ২১ জানুয়ারি ছাত্র সমাবেশে মূল বক্তা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। পরের দিন ২২ তারিখ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এসএফআইয়ের প্রতিনিধি সম্মেলন। এই ১৫তম সম্মেলন থেকেই সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব এবং ছাত্র সংগঠন থেকেই থেকে বিদায় নেবেন সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরিবর্তে নতুন দায়িত্বের জন্য ঝকঝকে শিক্ষাগত কেরিয়ারের অধিকারী বিক্রমের পক্ষেই এসএফআই এবং সিপিএমের শীর্ষ মহলে পাল্লা ভারী। হিমাচল প্রদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সম্পাদক হওয়ার পরে উত্তর ভারতের ওই রাজ্যে এর আগে সংগঠনের দায়িত্বও সামলেছেন বিক্রম। সেই সুবাদেই তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক বলতেই পশ্চিমবঙ্গ বা দক্ষিণ ভারতের ছাত্র-নেতাদের কথা মনে আসে। সেই ধারা একটু অন্য রকম হলে ক্ষতি কী!’’ তবে এ বারও সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি পদ সম্ভবত দক্ষিণী হাতেই থাকবে।
ঘটনাচক্রে, রবিবারই পশ্চিমবঙ্গে আরএসপি-র নতুন যুব সম্পাদক হয়েছেন প্রাক্তন ছাত্র নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়িতে রাজ্য সম্মেলন থেকে আরওয়াইএফের বিদায়ী রাজ্য সম্পাদক অঞ্জনাভ দত্ত নতুন রাজ্য সভাপতি হয়েছেন। শ্রম আইন সংস্কার এবং চা-বাগানে মৃত্যুমিছিল রুখতে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার মতো বিষয়ের প্রতিবাদে প্রস্তাব পাশ করে পথে নামার কথাও হয়েছে।