—প্রতীকী ছবি।
অনলাইন ঘটকালির সংস্থার মাধ্যমে আলাপ তরুণ-তরুণীর। একে অপরকে পছন্দ হয় দু’জনের। চার হাত এক করার তাড়া দিচ্ছিলেন তরুণী। কিন্তু বিয়ের আগে ওই তরুণীর সঙ্গে আরও কিছুটা সময় কাটাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তরুণীর বিয়ের তাড়া থাকায় বাগ্দান পর্বের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন তরুণ। প্রথম বিয়ে টেকেনি তরুণের। ওই তরুণীও বিবাহবিচ্ছিন্না। নতুন সংসার পাতবেন বলে উৎসাহী ছিলেন দু’জনেই। আংটিবদলের অনুষ্ঠানের তারিখ থেকে শুরু করে বিয়ের কার্ডের নকশা নিয়ে আলোচনা করার জন্য দেখাও করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তার আগেই লাগল দু’পক্ষের ঝগড়া।
তরুণের উপার্জন কম জানতে পেরে ঝগড়া শুরু করেন তরুণী। তরুণীর মাও ওই তরুণকে হুমকি দিতে থাকেন। সেই চ্যাটের স্ক্রিনশটই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন তরুণ। ‘কিশ সিফ’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের পাতায় কয়েকটি স্ক্রিনশটের ছবি পোস্ট করা হয়েছে (যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)।
সেখানে দেখা যাচ্ছে, আংটিবদলের অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ পাকা করার জন্য তরুণকে তাড়া দিচ্ছিলেন সেই তরুণী। তরুণ বলেন, ‘‘আমাদের দু’জনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। একে অপরকে চেনার জন্য আমাদের আরও একটু সময় দেওয়া প্রয়োজন।’’
তরুণী জানান, তিনি বিয়ের জন্য আর অপেক্ষা করতে পারবেন না। তা হলে তিনি অন্য সম্বন্ধ খুঁজে নেবেন। তা শুনে তরুণীকে বাগ্দান পর্বের সম্ভাব্য দিনক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন করেন তরুণ। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে আংটিবদল করতে চান তরুণী। তা শুনে রাজিও হয়ে গেলেন পাত্র। বিয়ের কার্ডের নকশা নিয়ে আলাদা ভাবে দেখা করার কথাও ঠিক হয় দু’জনের। তখনই তরুণ বলেন, ‘‘ওয়েবসাইটে আমার প্রোফাইল তৈরির সময় টাইপ করতে গিয়ে একটা ছোট্ট ভুল হয়ে গিয়েছে।’’ তা জানার পর তরুণী বলেন, ‘‘ঠিক আছে। কোনও সমস্যা নেই। আমরা তো দেখা করছি। সে দিন এই নিয়ে কথা বলব।’’
তরুণীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তরুণ বলেন, ‘‘তুমি খুবই ভাল মানুষ। আমার বার্ষিক আয় ৩০ লক্ষ নয়। বছরে ৩ লক্ষ টাকা রোজগার করি আমি। একটা বাড়তি শূন্য পড়ে গিয়েছে। তুমি প্লিজ় আমায় ক্ষমা করে দিয়ো। কাল কখন, কোথায় দেখা করব তা জানিয়ে দিয়ো।’’
এই কথা শুনে রেগে বোম হয়ে যান তরুণী। অকথ্য ভাষায় তরুণকে গালাগালি করতে শুরু করেন তিনি। বিয়ে ভেঙে দেন তিনি। ছাড়েন না তরুণীর মাও। অসত্য বলে তাঁর কন্যাকে ঠকানো হয়েছে বলে তরুণকে হুমকি দিতে থাকেন তিনি। তরুণীর মা বলেন, ‘‘আমি তোমাকে ছাড়ব না। তোমাকে আদালতে টেনে নিয়ে যাব। তুমি জানো না, আমি আমার প্রাক্তন জামাইয়ের কী অবস্থা করেছিলাম। তোমার পুরো পরিবারের নামে আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাব।’’
সব শুনে তরুণ জানান যে, তিনি মজা করেছিলেন। তিনি বছরে ৩০ লক্ষ টাকাই উপার্জন করেন। আগে তিনি পেশায় সফ্টঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। এখন তিনি পেশায় উকিল। তাই আইনের মারপ্যাঁচ সবই বোঝেন তিনি। তরুণীর মাকে পাল্টা জবাব দিয়ে তরুণ বলেন, ‘‘আমাকে ভয় দেখিয়ে কোনও লাভ নেই। বছরের পর বছর যদি আদালতে যেতে না চান, তা হলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা বন্ধ করে দিন।’’
তরুণের দাবি, প্রাক্তন জামাইকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে নাকি তাঁর কাছ থেকে ৮০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন তরুণীর মা। এমনকি, আগের বিয়ে নিয়েও নাকি নানা রকম গল্প শুনিয়েছেন তরুণকে।
তরুণের এই পোস্ট দেখে নেটাগরিকেরা তরুণী এবং তাঁর মায়ের প্রতি ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। এক নেটব্যবহারকারী বলেন, ‘‘মেয়েটি কি তোমায় টাকার জন্যই বিয়ে করতে চেয়েছিল?’’