১৩ জানুয়ারি সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতীকী চিত্র।
বারাণসী থেকে কলকাতা ও ঢাকা হয়ে ডিব্রুগড়। ১৩ জানুয়ারি সূচনার পর ৩,২০০ কিলোমিটার জলপথ পাড়ি দেবে প্রমোদতরী। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা মোট ২৭টি নদনদী ধরে এগিয়ে যাবে। গোটা পথ পার হতে সময় লাগবে ৫০ দিন। তার মধ্যে ১২ দিন থাকার কথা বাংলায়। মুর্শিদাবাদ দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করে আসবে কলকাতায়। তার পরে বাংলাদেশের দিকে যাবে। ও পার বাংলায় ১৫ দিন কাটিয়ে ফের ভারতে প্রবেশ। ব্রহ্মপুত্র ধরে যাবে অসমের ডিব্রুগড়ে। এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, এই প্রমোদতরীর যাত্রীরা সকলেই হবেন বিদেশি পর্যটক।
বাংলায় গঙ্গার উপর দিয়ে যাওয়ার পথে বিভিন্ন শহরে দাঁড়াবে প্রমোদতরী ‘গঙ্গা বিলাস’। বিভিন্ন শহরে দাঁড়ানোর সময়ে সেই জায়গা ঘুরিয়ে দেখানো হবে পর্যটকদের। সেই কারণে রাজ্যের বিভিন্ন ঐতিহাসিক শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। মুর্শিদাবাদ, মায়াপুর, কালনা, ব্যান্ডেল, চন্দননগর ও কলকাতা।
কেন্দ্রীয় সরকারের জলপথ মন্ত্রকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই সফরের আয়োজক বেসরকারি সংস্থা অন্তরা লাক্সারি রিভার ক্রুজ এবং জেএম বাক্সি রিভার ক্রুজ। যা জানা গিয়েছে তাতে মুর্শিদাবাদের ঘাটে প্রমোদতরী দাঁড়ানোর পরে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হবে খুশবাগে। নবাব আলিবর্দি খানের মসজিদ দেখানোর পরে গন্তব্য হবে বরানগর গ্রাম। গ্রামীণ বাংলার রূপ দেখানোর পরে রানি ভবানীর মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে। পরের দিনে হাজারদুয়ারি, ইমামবড়া এবং কাটরা মসজিদ। সন্ধ্যায় থাকবে মুর্শিদাবাদের স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
মায়াপুর মূল গন্তব্য হবে ইস্কনের মন্দির। এর পরের গন্তব্য মন্দির শহর কালনা। এখানে রাজবাড়ি থেকে প্রাচীন মন্দিরে ঘোরানো হবে। দেখানো হবে বিখ্যাত ১০৮ শিবমন্দির। টেরাকোটার মন্দির ছাড়াও শ্রীচৈতন্যের স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন জায়গাতেও নিয়ে যাওয়া হবে পর্যটকদের। বর্ণনার জন্য রাখা হবে স্থানীয় গাইড। নিয়ে যাওয়া হবে লালজি মন্দির এবং ২৪ চূড়ার মন্দিরে।
কালনা থেকে কলকাতার পথে প্রথম গন্তব্য ব্যান্ডেল এবং চন্দননগর। ব্যান্ডেল চার্চ ছাড়াও পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হবে হাজি মহসিনের সমাধিতে। দেখানো হবে বিভিন্ন পর্তুগিজ স্থাপত্য। আর অতীতের ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগর ভ্রমণের থাকবে দু’টি ভাগ। প্রথম ভাগে ফরাসি চন্দননগরের বিভিন্ন স্থাপত্যের সঙ্গে প্রাচীন অনেক মন্দিরেও নিয়ে যাওয়া হবে। অপর ভাগে বিপ্লবতীর্থ চন্দননগরের নানা ইতিহাস তুলে ধরা হবে পর্যটকদের সামনে। গন্তব্যের মধ্যে তাই চন্দননগরের ফরাসি সংগ্রহশালা যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে বিপ্লবী মতিলাল রায়ের বাড়ি ও প্রবর্তক আশ্রম।
এর পরে বাংলার শেষ শহর রাজধানী কলকাতা। এখানে ঠিক কত দিন প্রমোদতরী থাকবে তা জানা না গেলেও ভ্রমণসূচিতে রয়েছে অনেক পর্যটন স্থান। সাম্প্রতিক কালের ইকো পার্ক, সায়েন্স সিটি যেমন রয়েছে তেমনই থাকছে জাদুঘর, জাতীয় গ্রন্থাগার। পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হবে মাদার টেরিজার বাড়িতেও। কলকাতা মেট্রো রেল থেকে চক্ররেল বা ট্রামেও ঘোরানো হবে পর্যটকদের। সারাদিন শহর পরিক্রমা চললেও রাত্রিবাস প্রমোদতরীতেই। যেখানে আধুনিক জিম থেকে শুরু করে বিনোদনের সব উপায়ই মজুত থাকবে।