ছবি : সংগৃহীত
পুজোর ছুটিতে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও কলকাতার মোহ কাটিয়ে কোথাও গিয়ে উঠতে পারেননি। গত দু’বছরের ভয় কাটিয়ে উৎসব এই বছর পুরনো আমেজ ফিরে পেয়েছে। এমন সময় ঘুরতে গেলেও চলে না। আবার অন্য সময় বেশি ছুটি পাওয়া যাবে না বলে আফসোসও হচ্ছে।
চিন্তা কী! সামনেই দীপাবলি। কালীপুজো আর ভাইফোঁটা মিলিয়ে দিন তিনেকের ছুটিতে কাছেপিঠে কোথাও ঘুরে এলে মন্দ হয় না।
কলকাতার কাছেপিঠে তেমনই কিছু ঘোরার জায়গার হদিস দিচ্ছে আনন্দবাজার অনলাইন।
১) ঝিলিমিলি
ক’দিনের ছুটিতে জঙ্গল এবং জলাশয় ঘেরা এক টুকরো স্বর্গের ঠিকানা হতেই পারে বাঁকুড়া জেলার ঝিলিমিলি। এক পাশে শাল, সেগুন, মহুয়ার জঙ্গল। আর এক পাশে ঝিলিমিলি বাঁধের নীল জল, আপনার মন ভরিয়ে দেবে।
কলকাতা থেকে ঝিলিমিলির দূরত্ব প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার। গাড়িতে যেতে সময় লাগে সাড়ে ৫ ঘণ্টার মতো। চাইলে ভোরবেলা বেরিয়ে এক দিনে ঘুরে কলকাতায় ফিরে আসাই যায়। কিন্তু ঝিলিমিলিতে এক রাত না কাটালে জঙ্গলে থাকার মজা উপভোগ করতে পারবেন না।
থাকার জন্য এখানে একটিই গেস্টহাউস রয়েছে। তাই আগে থেকে বুক না করলে ‘রিমিল’-এর গাছবাংলোয় থাকার সুযোগ পাবেন না।
২) কিরিবুরু-মেঘাতুবুরু
পুজোর পর থেকেই বেশ শীতের আমেজ পড়তে শুরু করেছে। সুবর্ণরেখা নদীর ব্রিজ পেরিয়ে শাল-পিয়ালের ঘন জঙ্গল ঘেরা সারান্ডায় গেলে আর ফিরতে ইচ্ছে করবে না।
হো ভাষায় ‘কিরি’ শব্দের অর্থ হল হাতি এবং ‘বুরু’ শব্দের অর্থ পাহাড়। যেতে আসতে পথের ধারে হাতির দেখা মিলতেই পারে।
‘মেঘাতু’ শুনে বুঝতেই পারছেন মেঘের কথা বলা হচ্ছে। পাহাড়ের গায়ে মেঘ ঘুরে বেড়ায় এখানে। মেঘের দেশে সময়ে অসময়ে বৃষ্টি হওয়াই দস্তুর। তাই সঙ্গে ছাতা যেন অবশ্যই থাকে।
হাওড়া থেকে খড়্গপুর হয়ে মাত্র ৬ ঘণ্টায় বড়বিলগামী যে কোনও ট্রেনে পৌঁছে যাওয়া যায়। থাকার জায়গা খুব বেশি নেই। আগে থেকে বুক করে রাখতে হবে ‘সেল’-এর গেস্টহাউস বা মেঘাতুবুরু বনবাংলো।
চাইলে গাড়ি নিয়েও যেতে পারেন। কিন্তু খনি অঞ্চলের রাস্তা খুব সুখকর নয়।
৩) ঝাড়গ্রাম
পাহাড়, জঙ্গল, নদী— এই তিনটিই একসঙ্গে পেতে চাইলে ঘুরে আসুন ঝাড়গ্রাম থেকে। ট্রেনে বা গাড়িতে, সময়ের বিশেষ হেরফের হয় না। ঝাড়গ্রাম পৌঁছতে সময় লাগবে মোটামুটি ৫ ঘণ্টা।
এখানে এলে অবশ্যই ঘুরে দেখবেন ডুলুং নদী, লোধাশুলির জঙ্গল, ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি, চিল্কিগড় রাজবাড়ি, কনকদুর্গা মন্দির। থাকার জন্য সরকারি লজ তো আছেই। এ ছাড়াও বহু বেসরকারি হোটেল রয়েছে। ভোরবেলা কলকাতা থেকে বেরিয়ে ওই দিনই পৌঁছে যাওয়া যায়। এক দিন থেকে পরের দিন আবার কলকাতায় ফিরে আসা। ৩ দিনের ছুটিতে ঘোরার আদর্শ জায়গা ঝাড়গ্রাম।