রোটাং পাস,হিমাচল প্রদেশ। ছবি: সংগৃহীত।
শীতের ছুটিতে পাহাড়ে যাবেন। পরিকল্পনা শুরু করেছেন। কিন্তু জানেন কি, ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ভারতের বহু পাহা়ড়ি এলাকা পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকে? যেমন, হিমাচল প্রদেশের জনপ্রিয় একটি জায়গা রোটাং পাস। যাঁরা প্রথম বার সিমলা-কুলু-মানালি যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তাঁদের তালিকায় অনিবার্য ভাবে থাকে এই স্থানটি থাকেই। কিন্তু, ডিসেম্বরে ক্রিসমাসের ছুটিতে গেলে রোটাংয়ের রাস্তা খোলা না পাওয়ার সম্ভবনাই বেশি। হিমাচল প্রদেশের এক পর্যটন ব্যবসায়ী সুব্রত দাস বললেন, ‘‘রোটাং পাস বন্ধ হওয়ার সময় নির্ভর করে তুষারপাতের উপর। তবে মূলত ডিসেম্বরের শুরু থেকে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত রোটাং বন্ধ থাকে।’’
গুরুদোংমার: উত্তর সিকিমের এই হ্রদের জল শীতের মরসুমে জমে বরফ হয়ে যায়। অনেকেই বরফ ঢাকা গুরুদোংমার দেখতে ডিসেম্বরে বা জানুয়ারিতে সেখানে যেতে চান। কিন্ত ১৭ হাজার ৮০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত হ্রদে আসার পথ এই সময় প্রবল তুষারপাতে বন্ধ হয়ে যায়। ডিসেম্বর মাঝামাঝি সময় থেকে ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত সাধারণত গুরুদোংমারের রাস্তা বন্ধ থাকে। তবে, তা নির্ভর করে তুষারপাতের উপর।
গুরুদোংমার হ্রদ। ছবি: সংগৃহীত।
নাথু লা: সিকিমের জনপ্রিয় দু’টি পর্যটনস্থল হল ছাঙ্গু লেক এবং নাথু লা। ডিসেম্বরে বেড়ানোর পরিকল্পনা করলে নাথু লা যাওয়াও অনিশ্চিত হতে পারে। নাথু লার উচ্চতা ১৪ হাজার ১৪০ ফুট। শীতের মরসুমে এখানকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২০ ডিগ্রি নীচেও নেমে যায় অনেক সময়। বছরের বেশির ভাগ সময়েই এখানে বরফ থাকে। শীতে নাথু লা চলে যায় বরফের তলায়। ফলে নাথু লা যাওয়ার পরিকল্পনা করলে মার্চ-এপ্রিলের পর থেকে নভেম্বরের মধ্যে কোনও সময়ে যেতে পারেন।
স্পিতি উপত্যকা: ঊষর পাহাড়। উপত্যকার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে নদী। সেই রং চোখে লেগে থাকার মতো। হিমাচল প্রদেশের স্পিতি উপত্যকাকে 'শীতল মরুভূমি' বলা চলে। উচ্চতাজনিত কারণে এখানে গাছপালা বড় একটা জন্মায় না। বছরভর ঠান্ডা থাকে। স্পিতিতেও কিন্তু ডিসেম্বরে আসার পরিকল্পনা করলে নিরাশ হতে পারেন। সুব্রত দাস জানাচ্ছেন, স্পিতিতে তুষারপাত বেশি হয়। শীতের সময়ে বরফে ঢাকা থাকে। এই সময় ‘অ্যাডভেঞ্চর ট্যুরিজম’-এ আগ্রহী কেউ কেউ আসেন। কেউ আসেন স্নো লেপার্ড দেখার জন্য। এই সমস্ত জায়গায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নীচে পৌঁছে যায়। সেই তাপমাত্রা সমতল থেকে আসা পর্যটকেরা অনেকেই সহ্য করতে পারেন না। তার উপর তুষারপাত বেশি হলে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকেই।
সে লা: অরুণাচল প্রদেশের সে লা জনপ্রিয় একটি পর্যটনকেন্দ্র। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪ হাজার ১৭০ মিটার উঁচু সে লা গিরিপথ শীতের মরসুমে কয়েক ফুট গভীর বরফের আস্তরণে ঢেকে যায়। তাওয়াং এবং পশ্চিম কামেং জেলার সীমানায় রয়েছে এই গিরিপথ। ডিসেম্বর শেষ দিকে বা জানুযারি-ফেব্রুয়ারিতে এই স্থান বরফে ঢাকা থাকে। অরুণাচল যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও শীতের মরসুমে এই স্থানটি বাদ দিতে হবে। সে লা ঘুরতে গেলে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে কোনও একটি সময় বেছে নিতে পারেন।